বিজেপি জমানায় সাংবিধানিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কী ভাবে মর্যাদা ও গুরুত্ব নষ্ট করা হচ্ছে, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘নানা সারচার্জ ও সেস বসিয়ে কেন্দ্র রাজস্ব তুলছে, যার ভাগ রাজ্য পায় না।
কলকাতায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্মচারী সংগঠনের অনুষ্ঠানে সীতারাম ইয়েচুরি।
মোদী সরকারকে ‘কালা কৃষি কানুন’ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করিয়ে কৃষক আন্দোলন সম্প্রতি ‘ঐতিহাসিক সাফল্য’ পেয়েছে। কৃষকদের ওই আন্দোলনের পাশে ছিল অন্যান্য অংশের লড়াকু জনতাও। স্বৈরতন্ত্রকে পরাস্ত করতে যৌথ আন্দোলনই এখন এগোনোর রাস্তা বলে মনে করছেন সীতারাম ইয়েচুরি ও বাম নেতৃত্ব।
সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, স্বাধীনতার সময়ে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাঠামো সংবিধান প্রণেতা ও দেশের নেতারা বেছে নিয়েছিলেন, তার সঙ্গে আরএসএস-বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রের ভাবনা একেবারেই খাপ খায় না। তাই বিজেপি জমানায় সাংবিধানিক কাঠামোকে অমান্য করাই রেওয়াজ। এই পরিকল্পনাকে ঠেকাতে গেলে সমাজের বিভিন্ন অংশের লড়াইকে একত্রিত করে যৌথ আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষেই বুধবার সওয়াল করেছেন ইয়েচুরি। ব্যাঙ্ক কর্মচারী আন্দোলনের পথিকৃৎ নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ আশিস সেনের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে কলকাতায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কে এক অনুষ্ঠানে ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘মানুষের ঐক্যকে এই সাম্প্রদায়িক, স্বৈরাচারী শক্তি ভয় পায়। তাই তারা বিভাজন ধরানোর চেষ্টা করে যাবে। আমাদের সতর্ক থেকে বিভাজনের ফাঁদে পা না দিয়ে যৌথ আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে হবে। শুধু আলাদা আলাদা ক্ষেত্রের লড়াইয়ে থেমে থাকলে চলবে না।’’
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ দিনের অনুষ্ঠানে সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সমীর সেন, কলকাতা শাখার সম্পাদক শ্রীমন্ত মিত্র এবং ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। ইয়েচুরি সেখানে ব্যাখ্যা করেন, দেশের দরিদ্রতম মানুষকেও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে এক সময়ে ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের জন্য লড়াই হয়েছিল এবং সরকার সেই মর্মে পদক্ষেপ করেছিল। এখন ৫০ বছর পেরিয়ে এসে আবার ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে!
বিজেপি জমানায় সাংবিধানিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কী ভাবে মর্যাদা ও গুরুত্ব নষ্ট করা হচ্ছে, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘নানা সারচার্জ ও সেস বসিয়ে কেন্দ্র রাজস্ব তুলছে, যার ভাগ রাজ্য পায় না। বেশির ভাগ রাজ্যে রাজ্যপালেরা সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ নন, কেন্দ্রের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। বিরোধী নেতাদের দমিয়ে রাখতে ইডি, সিবিআই, এনআইএ-কে আখছার ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কোনও ভিন্নমত মানেই এখন রাষ্ট্রদ্রোহ!’’ জাতীয় সম্পদ বাঁচানোর লড়াইয়ের ডাক দিয়ে ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘দেশের সম্পদের মালিক দেশের মানুষ। সরকারকে সেই সম্পদের ম্যানেজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সম্পদ যার, তার সম্মতি ছাড়া ম্যানেজার সম্পত্তি নিয়ে টানাটানি করতে গেলে তাকে কেউ রাখে না। দেশের সম্পদ বিক্রি করছে যে ম্যানেজার, সেই সরকারকে মানুষই সরিয়ে দেবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy