Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জামিন বেঞ্চ থেকে সরে গরহাজির বিচারপতি

কলকাতা হাইকোর্টের প্রবীণ বিচারপতি অসীম রায়ের সঙ্গে তীব্র মনোমালিন্যের জেরে ‘জামিন বেঞ্চ’ থেকে সরে যেতে হল বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনানকে। বিচারপতি কারনান এ বার থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত মামলাগুলির বিচার করবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ০২:৫৩
Share: Save:

কলকাতা হাইকোর্টের প্রবীণ বিচারপতি অসীম রায়ের সঙ্গে তীব্র মনোমালিন্যের জেরে ‘জামিন বেঞ্চ’ থেকে সরে যেতে হল বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনানকে। বিচারপতি কারনান এ বার থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত মামলাগুলির বিচার করবেন। বুধবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের কার্যালয় থেকে এই মর্মে নির্দেশ গিয়েছে তাঁর কাছে।

মঙ্গলবারের ঘটনার পর জামিন বেঞ্চের কী হবে, তা নিয়ে আদালতের বিভিন্ন মহলে এ দিন কৌতূহল ছিল। বেলা গড়াতেই জানা যায়, বিচারপতি কারনান আসছেন না। হাইকোর্ট সূত্রের খবর, তিনি আসবেন না বলে প্রধান বিচারপতির সচিবালয়ে খবর পাঠিয়েছেন। তবে না-আসার কারণ অবশ্য জানাননি বিচারপতি কারনান। আজ, বৃহস্পতিবার তিনি আদালতে আসবেন কি না, তাও কেউ জানেন না।

এ দিন অবশ্য আদালত খোলার পর বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বিচারপতি অসীম রায় বিচারপতি মলয়মরুত বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে জামিন বেঞ্চে বসেন। সারা দিন ওই ডিভিশন বেঞ্চে জামিন ও আপিল সংক্রান্ত মামলার শুনানিও হয়। তার মধ্যেই খবর ছড়িয়ে পড়ে, বিচারপতি কারনানকে জামিন বেঞ্চ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর বিচারপতি রায়কে তাঁর চেম্বারে ডেকে পাঠিয়ে সবিস্তার জানতে চান। বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে নালিশ না-জানালেও ঘটনাটি বর্ণনা করেন। প্রধান বিচারপতিকে ঘটনার কথা কথা জানাতে গিয়ে বিচারপতি রায় এতটাই উত্তেজিত হয়ে পড়েন যে তিনি পদত্যাগ করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। প্রধান বিচারপতি তাঁকে বিরত করে বলেন, তিনি অবিলম্বে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন।

বিবেকানন্দ রোডের উড়ালপুল-কাণ্ডের মামলার জন্য গঠিত জামিন বেঞ্চের দুই বিচারপতির মতবিরোধের সূত্রপাত ২০ মে। ওই দিন উড়ালপুল ভাঙার ঘটনায় ধৃতদের জামিন খারিজ করে দেন বিচারপতি অসীম রায়। সরকার পক্ষের দাবি, ওই দিন ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি কারনানও জামিন খারিজের পক্ষে মত দেন। কিন্তু ৬ জুন বিচারপতি কারনান জামিন খারিজের রায়ে নিজের সই কেটে বিচারপতি রায়কে জানিয়ে দেন, তিনি ধৃতদের জামিন দেওয়ার পক্ষে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৭ জুন সকালে ডিভিশন বেঞ্চ বসতেই ভরা এজলাসে বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিচারপতি রায়। কী কারণে বিচারপতি কারনান ২০ মে তারিখেই জামিন নিয়ে তাঁর মত পার্থক্যর কথা জানালেন না, কেনই বা তিনি জামিন খারিজের পক্ষে সই করে, আবার তা কেটে দিয়ে নতুন অর্ডার লিখলেন, সেই প্রশ্ন তোলেন হাইকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মনজিৎ সিংহও। ক্ষোভে ফুঁসে উঠে এক
সময়ে বিচারপতি রায়কে পিপি-র উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘‘এনাফ ইজ এনাফ! এ নিয়ে তিন-তিন বার হল। অনেক সহ্য করেছি!’’ ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার বিকেলে সাধারণ সভা ডেকে বিচারপতি কারনানকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয় হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

High court Judge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE