সারদায় অভিযুক্ত মন্ত্রী মদন মিত্রের জামিনের মামলায় তাঁর প্রতি অনাস্থা জানিয়েছিল সিবিআই। তাই সারদা নিয়ে কোনও মামলাই তিনি আর শুনবেন না।
সমরেশপ্রসাদ চৌধুরী। আলিপুর জেলা আদালতে এই বিচারকের এজলাসেই মন্ত্রী মদন মিত্রের জামিনের শুনানি চলছিল। মামলার মাঝপথে সিবিআইয়ের সন্দেহ হয়, বিচারক পক্ষপাত করছেন। এবং এই অভিযোগ জানিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে এজলাস বদলের আর্জি জানায় সিবিআই। হাইকোর্ট সেই আবেদন গ্রহণ করে মামলাটি অন্য আদালতে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই বিচারক সমরেশপ্রসাদ শুক্রবার জানিয়ে দিলেন সারদা নিয়ে সিবিআইয়ের আর কোনও মামলাই তিনি শুনবেন না।
ঘনিষ্ঠ মহলে বিচারক জানিয়েছেন, তাঁর প্রতি আস্থা নেই বলেই পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে সিবিআই। এই অবস্থায় স্বচ্ছতা
বজায় রাখতেই সারদা নিয়ে সিবিআইয়ের করা কোনও মামলাই তিনি শুনবেন না। তবে সিবিআইয়ের অন্য কোনও মামলা শুনতে তাঁর আপত্তি নেই। এমনকী, অন্য বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার মামলাও তিনি শুনতে রাজি আছেন।
আদালত সূত্রের খবর, সমরেশপ্রসাদ চৌধুরী রাজি না হওয়ায় এ বার থেকে সারদা সংক্রান্ত সিবিআইয়ের সমস্ত মামলা শুনবেন আলিপুরের অন্য কোনও বিচারক। এ দিন ছিল সারদা-কাণ্ডে ধৃত মাতঙ্গ সিংহের জামিনের শুনানি। মামলায় অংশ নিতে দিল্লি থেকে উড়ে এসেছিলেন সিবিআইয়ের প্রধান আইনজীবী কে রাঘবচারিলু। কিন্তু আদালতে মাতঙ্গ সিংহের হয়ে সওয়াল করার জন্য উপস্থিত ছিলেন না তাঁর আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়। তাই শুনানির জন্য অন্য এক দিন ধার্য করার জন্য মাতঙ্গ সিংহের তরফে বিচারককে অনুরোধ করা হয়। তখনই বিচারক তাঁর ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন। আগামী ১৫ জুন মাতঙ্গ সিংহের জামিনের শুনানি হবে ওই এজলাসেই। কারণ, সেটিই জেলা বিচারকের এজলাস। তবে সে দিন ওই এজলাসে সমরেশপ্রসাদবাবুর জায়গায় থাকবেন অন্য এক জন বিচারক। কোন বিচারক থাকবেন, তা ঠিক করবেন সমরেশপ্রসাদবাবুই। ঠিক হয়েছে, এ বার থেকে যখনই সারদা সংক্রান্ত সিবিআইয়ের মামলা আসবে, তখনই ওই এজলাসে অনুপস্থিত থাকবেন জেলা ও দায়রা বিচারক সমরেশপ্রসাদবাবু।
আদালত সূত্রের খবর, সমরেশপ্রসাদ চৌধুরীর এজলাস থেকেই সারদা মামলায় জামিন পান তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ সৃঞ্জয় বসু এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাব-কর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নীতু। আবার, এই এজলাসেই মন্ত্রী মদন মিত্র ও রজত মজুমদারের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে।
সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, মদন মিত্রের আইনজীবীদের জামিনের আবেদনের ভিত্তিতে এক দিন একতরফা ভাবে শুনানির দিন ঠিক করেছিলেন এই বিচারক। অথচ এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তাদের দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে হাইকোর্টে গিয়ে আদালত পরিবর্তনের আবেদন জানায় সিবিআই। হাইকোর্ট মামলাটি পাঠিয়ে দেয় কলকাতা নগর দায়রা আদালতে। তার পরে এ দিনই প্রথম সমরেশপ্রসাদবাবুর এজলাসে সারদা-সক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy