Advertisement
E-Paper

‘কর্তব্য পালনে ব্যর্থ, ইস্তফা দিন’, বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে ‘ব্যর্থ’ কাউন্সিলরকে কটাক্ষ বিচারপতির

আদালতে হাজিরা দিয়ে চামেলি জানান, গত বছর থেকে তিনি ওই এলাকার কাউন্সিলর। ওই এলাকায় কয়েকশো বাড়ি রয়েছে। কিন্তু কোনটা আইনি, কোনটা বেআইনি নির্মাণ, তা তিনি জানেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৫৩
image of Justice Abhijit Gangopadhyay

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

বিধাননগরের বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে ব্যর্থ হয়েছে পুরসভা এবং পুলিশ। সোমবার তাদের ফিরে যেতে বললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তার আগে কাউন্সিলর এবং পুলিশকে ভর্ৎসনা করলেন তিনি। জানালেন, কর্তব্য পালনে ব্যর্থ কাউন্সিলর। তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার কথাও বললেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় এই মামলার শুনানি। ওই দিন পাঁচতলা বাড়ির ১৬টি পরিবারের সদস্যকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।

সোমবার সকালে বিধাননগরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত একটি বেআইনি ভবন ভাঙার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পুরসভা তা ভাঙতে গেলে স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়ে। এর পরেই ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চামেলি নস্করকে তলব করেন বিচারপতি। আদালতে হাজিরা দিয়ে চামেলি জানান, গত বছর থেকে তিনি ওই এলাকার কাউন্সিলর। ওই এলাকায় কয়েকশো বাড়ি রয়েছে। কিন্তু কোনটা আইনি, কোনটা বেআইনি নির্মাণ, তা তিনি জানেন না। এর পরেই বিচারপতি জানান, কাউন্সিলর নিজের কর্তব্য পালনে ব্যর্থ। হাই কোর্টের এজলাসে কথোপকথন ছিল এ রকম:

বিচারপতি: আপনি কাউন্সিলর হয়ে না জানলে পদে থাকবেন না। ইস্তফা দিয়ে দিন। আপনি নিজের কর্তব্য পালন করতে ব্যর্থ। হয় ইস্তফা দিন। নয়তো আমাকে নির্দেশ দিতে হবে। আপনি পছন্দ করুন।

বিচারপতি: পুলিশ কী করছে? পুলিশ ব্যর্থ হলে ওখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেব।

কাউন্সিলর: আমি পুরসভাকে চিঠি দিয়েছিলাম। বেআইনি নির্মাণ নিয়ে পদক্ষেপ করুন। কিন্তু পুরসভা কিছু জানায়নি।

বিচারপতি: আপনার এলাকা সম্পর্কে খবর রাখা উচিত ছিল। আপনি নিজের দায়িত্বে অনুপযুক্ত।

কাউন্সিলর: ওই জমিটি উদ্বাস্তুদের জন্য একটি প্রকল্প থেকে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পর অনেক নির্মাণ হয়েছে।

কাউন্সিলরের আইনজীবী: ওই নির্মাণ ভাঙতে বাধা দিচ্ছে ১৬টি পরিবার। তারা ওই ভবনটিতে থাকে। মহিলারা প্রবেশ পথে শুয়ে পড়েছেন। স্লোগান উঠছে, মরতে হয় মরব, লড়াই করব! বসতবাড়ি ছাড়ব ছাড়ব না।

বিচারপতি: উৎসবের মরসুমে হয়তো পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ। কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীকে ডাকা হোক। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে নির্দেশ দিতে পারি।

কাউন্সিলর: ওই বাড়িগুলির (প্রমিসেসের) কোনও ঠিকানা নেই। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর। ১৫টি বাড়ি রয়েছে।

কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) বিল্বদল ভট্টাচার্য: অন্য জনস্বার্থ মামলায় রাজ্য স্বীকার করেছে, ওই এলাকায় অনেক নির্মাণ হয়েছে। উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য ওই জমি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে পাঁচ-ছয় তলা ভবন বেআইনি ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চও বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে।

মামলাকারী পাঞ্চিবালা পোলের হয়ে এই মামলায় সওয়াল করেছেন আইনজীবী সুমিতাভ চক্রবর্তী এবং ঈপ্সিতা ঘোষ। সোমবারের শুনানিতে বিচারপতি নির্দেশ দেন, মঙ্গলবার সকালে ১৬টি পরিবারকে আদালতে হাজির হতে হবে। তারা আইনজীবী নিয়োগ করে বক্তব্য জানাতে পারবে।

Justice Abhijit Gangopadhyay Illegal Construction
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy