বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ দুর্নীতির পর এ বার মাদ্রাসা কমিশনে নিয়োগ নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। সেখানে বিচারপতি ১৫ দিনের মধ্যে মাদ্রাসা কমিশনকে ৭০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, শুনানি চলাকালীন কমিশনকে সামান্য ভর্ৎসনাও করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘সাপের লেজ দিয়ে কান চুলকোবেন না।’’
মাদ্রাসা কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা অপেক্ষাকৃত কম মেধার ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ দিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করেছে। মাদ্রাসা কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতেই হয়েছে ওই নিয়োগ। বিচারপতি কমিশনের ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে জানতে চান, কমিশন কি সংবিধানের উপরে মনে করে নিজেদের?
মাদ্রাসায় নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আকমল হোসেন-সহ সাত জন। এঁদের মধ্যে ছিলেন দু’জন হিন্দু এবং পাঁচ জন মুসলমান প্রার্থী। আদালতকে তাঁরা জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। সেই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে যে নিয়োগ হয়েছিল, তাতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এর জবাবে মঙ্গলবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, এই সাত জনকে জরিমানার অর্থ বাবদ ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে কমিশনকে। অর্থাৎ মোট ৭০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
গত কয়েক মাস ধরে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক মামলা হয়েছে আদালতে। সেই সব মামলায় একে একে রাজ্যের প্রাক্তন এবং বর্তমান মন্ত্রীদেরও নাম উঠে এসেছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের পর্যবেক্ষণ কমিটির বিরুদ্ধেও দায়ের হয়েছে মামলা। এই পরিস্থিতিতে মাদ্রাসা কমিশনের বিরুদ্ধেও নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তাদের সতর্ক করে আদালত। এই দুর্নীতি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তা বুঝিয়ে দিতেই সম্ভবত শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বলেন, ‘‘সাপের লেজ দিয়ে কান চুলকোবেন না।’’
মাদ্রাসা মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ২০১০ সালের মাদ্রাসা কমিশনের রুল অনুযায়ী বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। ভবিষ্যতে নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের সুযোগ দিতে হবে। মাদ্রাসা কমিশনকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা। জরিমানার অর্থ হিসাবে ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে ওই ৭ আবেদনকারীকে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy