Advertisement
E-Paper

আইআইটি খড়্গপুরের ছাত্রের মৃত্যুতে খুনের ধারা যোগ করার প্রস্তাব বিচারপতি মান্থার

গত অক্টোবরে আইআইটি খড়্গপুরে এক ছাত্রের মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ করেছিল তাঁর পরিবার। পরে মামলাটি হাই কোর্টে উঠলে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরির নির্দেশ দেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ১৪:১৬
আইআইটি খড়্গপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তদন্তকারীদের কয়েক দফা নতুন নির্দেশ দিলেন বিচারপতি মান্থা।

আইআইটি খড়্গপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তদন্তকারীদের কয়েক দফা নতুন নির্দেশ দিলেন বিচারপতি মান্থা। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

আইআইটি খড়্গপুরের এক ছাত্রকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল তাঁর পরিবার। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টও সেই খুনের তত্ত্ব পুরোপুরি উড়িয়ে দিল না। হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মঙ্গলবার শুনানি ছিল এই মামলার। বিচারপতি মান্থা জানিয়েছেন, তিনি এই মামলায় খুনের শাস্তির ধারা ৩০২ যুক্ত করার কথা ভাবছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ধারায় দোষী প্রমাণিত হলে অপরাধীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।

গত অক্টোবরে আইআইটি খড়্গপুরে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ফায়জন আহমেদ নামে এক ছাত্রের। হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্নও ছিল। ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বিষয়টিকে কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দিতে চাইছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। হাই কোর্টে মামলা হয় এ নিয়ে। মঙ্গলবার হাই কোর্টও মন্তব্য, ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় আইআইটি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা কাজ করেছে।

আইআইটি ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন, তা খতিয়ে দেখতে এর আগে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থা। পরে সেই কমিটিও তাদের রিপোর্টে জানায় ফায়জনের মাথার পিছনে ভারী কোনও বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওই রিপোর্ট পেয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ফায়জনের দেহ আরও এক বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। মঙ্গলবার সেই দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় আদালতে। তা দেখেই বিচারপতি মান্থা পুলিশের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার সময় এসে গিয়েছে। এ বার ৩০২ ধারা যুক্ত করার বিষয়ে ভাবতে হবে।’’ এ বিষয়ে তদন্তকারীদের কয়েক দফা নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি।

মঙ্গলবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ অজয় গুপ্তের কমিটি মৃত ফায়জন আহমেদের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দেন আদালতে। রিপোর্ট দেখে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘দ্বিতীয় রিপোর্ট দেখে মনে হচ্ছে ময়নাতদন্তের প্রথম রিপোর্টে কিছু প্রভাব ছিল আইআইটি কর্তৃপক্ষের। এর আগে মাথায় আঘাত লাগার ঘটনাকে লঘু করে দেখানো হয়েছে। অথচ প্রবল রক্তক্ষরণে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত থেকে পরিষ্কার মৃতের মাথা এবং বুকে ক্ষত ছিল।’’

এর পরই বিচারপতি মান্থা নির্দেশ দেন, ‘‘বুধবারের মধ্যে তদন্তকারী অফিসারকে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। ৩০২ ধারা যুক্ত করা যায় কি না, তা দেখতে হবে। আগামী শুনানিতে এই মামলার কেস ডায়েরি আদালতে আনতে হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল)-কে ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্টও দিতে হবে।’’

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য অসম থেকে মৃত ছাত্রের দেহ কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছিল। রাজ্যকে আবার পরিবারের হাতে মৃতদেহটি তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এই ঘটনায় আদালতে সিবিআই বা নিরপেক্ষ কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়েছিল পরিবার। মঙ্গলবারের শুনানিতে বিচারপতি মান্থার ইঙ্গিত, সিবিআই বা কেন্দ্রীয় সংস্থা নয়, রাজ্য পুলিশের দক্ষ অফিসারদের নিয়ে সিট গঠনের বিষয়ে চিন্তা করবে আদালত।

IIT Kharagpur Calcutta High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy