(বাঁ দিক থেকে) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সৌমেন সেন। —ফাইল চিত্র।
উচ্চ প্রাথমিকের মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন। তাঁর এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে মঙ্গলবার উচ্চ প্রাথমিকের মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তোলেন আবেদনকারীদের একাংশের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর বিচারপতি সেন মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান।
উচ্চ প্রাথমিকের মামলা বিচারপতি সেনের বেঞ্চে শুনানির জন্য উঠলে আইনজীবী কল্যাণ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘‘আমি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে কিছু বলতে চাই।’’ তাঁর আবেদন তৎক্ষণাৎ নাকচ করে দেন বিচারপতি সেন। তিনি বলেন, ‘‘এ সব নিয়ে আমি কিছু বলব না। যথেষ্ট হয়েছে। এই আদালত অপমানিত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে বলার অধিকার সকলের রয়েছে। বিচারপতির কাজ নির্দেশ দেওয়া। আমার কিছুই বলার নেই।’’
বিচারপতি সেন আরও বলেন, ‘‘কোনও মামলার প্রতি আমার বিশেষ আনুগত্য নেই। বিষয়টি নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই। তাই দয়া করে ওই বিষয়ে কিছু বলবেন না।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রসঙ্গে বিচারপতি সেন বলেন, ‘‘ওই বিচারপতির প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। আমার সকলের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে।’’ এর পরেই উচ্চ প্রাথমিকের মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান বিচারপতি সেন। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকে আসবেন, অনেকে যাবেন। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠান রয়ে যাবে। তাই আমি এই পরিস্থিতি নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’’
অন্য দিকে, বিচারপতি সেন উচ্চ প্রাথমিকের মামলা ছেড়ে দিতেই হাই কোর্টের সামনে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। হাই কোর্টের ‘বি গেট’-এর সামনে তাঁরা জড়ো হন। বিক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, বিচারপতিদের মধ্যে সংঘাতের ফল তাঁদের ভুগতে হচ্ছে।
মেডিক্যালে ভর্তি মামলা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। ওই মামলা প্রথমে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে উঠেছিল। বিচারপতি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। তা ডিভিশন বেঞ্চে যেতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দেন বিচারপতি সেন। এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের ‘ত্রুটি’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একাধিক অভিযোগ তোলেন বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে। ব্যক্তিগত স্বার্থে তিনি নির্দেশ দিচ্ছেন বলেও নির্দেশনামায় দাবি করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশই তিনি খারিজ করে সিবিআইকে তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেন।
দুই বিচারপতির এই বেনজির সংঘাতে স্বঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। এই সংক্রান্ত শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয় শীর্ষ আদালতে। শনিবার ছুটির দিনে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে বসে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। ওই দিন হাই কোর্টে মেডিক্যাল মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। তার পর সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, তারা এই মামলা নিজেদের হাতে নিচ্ছে। মামলার সব পক্ষকে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। তিন সপ্তাহ পরে এই মামলার শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy