জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ফাইল চিত্র।
প্রশাসন নানা ব্যবস্থা নিলেও বিভিন্ন জেলায় রেশন নিয়ে ক্ষোভ চোখে পড়ছে। কখনও বিক্ষোভ হচ্ছে খাদ্যশস্য না পাওয়া, কম পাওয়া, ‘পচা’ খাদ্যশস্য পাওয়া বা তা পাচারের অভিযোগে। কখনও কখনও দূরের দোকানে কেন রেশন আনতে যেতে হবে, সে আপত্তিতে।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শুক্রবার দাবি করেন, ‘‘রাজ্যে ২১ হাজার রেশন দোকানের মধ্যে ৩০০টিতে অশান্তি হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর আশ্বাস, রেশন-সামগ্রীর ‘সুষ্ঠু’ এবং ‘যথাযথ’ বণ্টন নিশ্চিত করতে সব স্তরের আধিকারিকদের দায়বদ্ধ করা হয়েছে। মুখ্যসচিব রাজীব সিংহও বলেন, ‘‘বিধি ভাঙার খবর পেলে ব্যবস্থা নেব। সারা রাজ্যে সমস্যা হলে বুঝব ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। কিন্তু এখনও রেশন ব্যবস্থা তেমন অবস্থায় যায়নি।’’
রেশনে খাদ্যশস্য কম দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়, সবং, মেদিনীপুর সদর ব্লক, পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন এলাকায়। নিম্ন মানের চাল, আটা দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ হয়েছে মালদহ, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে। রেশন দোকানে ঠিকঠাক ‘বিল’ না দেওয়া, দোকানের বাইরে কোন শ্রেণির উপভোক্তা, কী খাদ্যসামগ্রী পাবেন, তা টাঙানো থাকছে না— এমন অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমানে। দুর্নীতির অভিযোগে গত রবিবার হুগলির পুরশুড়ার এক ডিলারকে মারধর এবং তাঁর বাড়ি-গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে গ্রাহকদের একাংশের বিরুদ্ধে।
পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, জামুড়িয়ার কিছু কার্ডহীন বাসিন্দার দাবি, তাঁদের বাড়ি থেকে বহু দূরের এলাকার রেশন ডিলারের কাছে ‘ফুড কুপন’ (২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যাঁরা ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদন করেছেন, অথচ কার্ড হাতে পাননি তাঁদের ওই কুপন পাওয়ার কথা) গিয়েছে। কিন্তু দূরের রেশন দোকানে তাঁরা যাবেন কী করে?
আরও পড়ুন: ছোট্ট মেয়েকে গ্রামে রেখেই করোনার লড়াইয়ে মা-বাবা
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা রাজ্যপালের চিঠিতে এ বার সুর রাজনীতির
খাদ্য দফতরের দাবি, শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে ২৩০ জন ডিলারের বিরুদ্ধে। কিন্তু ডিলারদের একাংশের অভিযোগ, সরকারের কাছ থেকে সময়ে রেশনের জিনিস মিলছে না। ‘ওয়েস্টবেঙ্গল এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশন’-এর বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক গুরুপদ ধকের
কথায়, ‘‘বহু ডিলারের কাছে পর্যাপ্ত জিনিস পৌঁছয়নি।’’
সমস্যা মেটাতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। যেমন, অনেক পরিবারের সদস্যের তুলনায় কম রেশন কার্ড থাকায় তাঁরা পর্যাপ্ত রেশন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ওঠায় পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন ওই ধরনের পরিবার-সহ সহায়সম্বলহীন, অক্ষম মানুষদের চিহ্নিত করতে মানচিত্র তৈরি করেছে। যাঁদের খাবারের অভাব হতে পারে, তাঁদের ব্লক থেকে ত্রাণ-সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। গত ১৯ এপ্রিল এ মাসের খাদ্যশস্য বিলির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এ বার মে মাসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য সরকার। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সবাই এক মাসের চাল এক বারে পেয়েছেন। ডিজিটাল কার্ড যাঁদের নেই, তাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ত্রাণও পাবেন।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘কিছু জায়গায় গন্ডগোল বাধানো হচ্ছে। রাজনীতি করতে চাইছি না। এই সময় সবাই মানুষের পাশে থাকুন।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy