Advertisement
E-Paper

কাওয়াখালি এখন লিজের জটে

এ বছরের গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন কাওয়াখালির অনিচ্ছুক জমিদাতাদের জমি ফিরিয়ে দিতে। তার পরে আট মাস কেটে গিয়েছে। সব অনিচ্ছুক জমিদাতা জমি ফেরত পাননি। যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদেরও দেওয়া হয়েছে ৯৯ বছরের লিজে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৩

এ বছরের গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন কাওয়াখালির অনিচ্ছুক জমিদাতাদের জমি ফিরিয়ে দিতে। তার পরে আট মাস কেটে গিয়েছে। সব অনিচ্ছুক জমিদাতা জমি ফেরত পাননি। যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদেরও দেওয়া হয়েছে ৯৯ বছরের লিজে। ফলে এ জমি তাঁরা না পারবেন বেচতে, না পাবেন জমি দেখিয়ে ঋণ। দুই ক্ষেত্রেই এসজেডিএ-র অনুমতি নিতে হবে তাঁদের।

এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে অনিচ্ছুক জমিদাতাদের মধ্যে। অধিগ্রহণ করা হয়েছিল খতিয়ান ভুক্ত জমি, আর ফেরত দেওয়া হচ্ছে লিজ ল্যান্ড— এর প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন অনিচ্ছুক জমি মালিক শ্যামলাল আগরওয়াল। জমিতে পূর্ণ সত্ত্ব না দেওয়া হলে সরকারের বিরুদ্ধে ফের মামলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন থিকনিকাটা কাওয়াখালি ল্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কর্তারা।

থিকনিকাটা কাওয়াখালি ল্যান্ড ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মণিমোহন বিশ্বাস বলেন, ‘‘২২ জনের জমি এখনও আটকে রয়েছে। তাই আবার মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া হবে। সেই সঙ্গে জমি দেখিয়ে ঋণ নিতে কিংবা তা বিক্রি করতে যাতে এসজেডিএ আটকে না দেয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’’ এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভার অনুমোদনেই ৯৯ বছরের লিজে জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঋণ নিতে সমস্যা হবে না। তবে বিক্রি করতে গেলে এসজেডিএকে একবার জানিয়ে নিতে হবে।’’

প্রাক্তন ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক শ্যামলকুমার দাস বলেন, ‘‘লিজের জমির প্রকৃত মালিক সরকার। বিশেষ অনুমতির ভিত্তিতে জমি বিক্রি হলেও যিনি কিনবেন তাঁকেও জমি লিজেই নিতে হবে।’’ এসেজিডএ-র কয়েক জন অফিসারের দাবি, রাজ্যের অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী, কোনও জমি একবার অধিগ্রহণ করে কাউকে লিজ দিলে সেটা ফেরাতে মন্ত্রিসভার অনুমতি দরকার। অন্যথায় দীর্ঘমেয়াদি লিজে জমি ফেরত দেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে এসজেডিএ দ্রুত লিজে জমি ফেরানোর কাজটাই সেরে ফেলেছে।

এই প্রসঙ্গেই শ্যামলাল বলেন, ‘‘রাজ্য আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। খতিয়ানের জমির বদলে লিজের জমি কোনও কাজে লাগবে না। ইচ্ছে অনুসারে ওই জমি আমরা ব্যবহার করতে পারব না। তাই হাইকোর্টে মামলা করেছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শুধু লিজই নয়, ফেরত পাওয়া জমি নিয়ে আরও জটিলতা রয়েছে। অনিচ্ছুক মালিকদের যে এলাকার জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, সেই এলাকায় তাদের জমি ফেরত দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ।’’

এসজেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫২ জনের মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার ৯ জন এবং বাকি ৪৩ জন দার্জিলিং জেলার। জলপাইগুড়ি জেলার ওই ৮ মালিককে জমি ফেরত দেওয়া হয়েছে দার্জিলিং জেলা এলাকায়। অন্যত্র জমি দেওয়ায় চার জন বাসিন্দাকে বাড়ি ঘর ভেঙে চলে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে তাঁরা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। আবার থিকনিকাটা এলাকায় যাঁদের জমি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের জমিতে দীর্ঘদিন থেকে চলছে কয়েকটি দোকান। ফলে ফেরত পেলেও জমির দখল নিতে পারছেন না মালিকরা। মনিমোহন বলেন, ‘‘জটিলতা কিছুতেই কাটছে না।’’

২০০৪ সালে কাওয়াখালিতে ৩০২ একর জমি অধিগ্রহণ করে রাজ্য। আবাসন একাধিক হাসপাতাল, উপনগরী তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়। ক্ষতিপূরণ না নিয়ে আন্দোলনে নামেম ৫২ জন। পাশে দাঁড়ায় তৃণমূল। তৃণমূল ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে জমি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।

Kawakhali Township West Bengal Govt Mamata Banerjee মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy