Advertisement
E-Paper

রক্তে মাখা ঘরে কারা, চিনিয়ে দিলেন আইসি

দোতলার প্যাসেজ জুড়ে রক্তের দাগ। জখম কাউকে টানতে টানতে সরিয়ে নিয়ে গেলে যেমনটা হয়। প্যাসেজ পেরিয়ে ঘর বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। মুমূর্ষু অবস্থায় দু’জন পড়ে। রয়েছে জখম আরও এক জন। তিন জনই পুরুষ। ঘরে রয়েছে দুই মহিলাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১০

দোতলার প্যাসেজ জুড়ে রক্তের দাগ। জখম কাউকে টানতে টানতে সরিয়ে নিয়ে গেলে যেমনটা হয়। প্যাসেজ পেরিয়ে ঘর বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। মুমূর্ষু অবস্থায় দু’জন পড়ে। রয়েছে জখম আরও এক জন। তিন জনই পুরুষ। ঘরে রয়েছে দুই মহিলাও।

২০১৪-র ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এমনটাই দেখেছিলেন বর্ধমান থানার তৎকালীন আইসি আবদুল গফ্ফর। শনিবার তাঁর সাক্ষ্য দিয়েই খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার রুদ্ধদ্বার বিচার শুরু হয়েছে কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক শুভ্রা ঘোষের এজলাস তথা এনআইএ কোর্টে। সরকারি কৌঁসুলি শ্যামল ঘোষ ও বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি তমাল মুখোপাধ্যায় জানান, ইউএপিএ-র ৪৪ নম্বর ধারা ও ২০০৮-এর এনআইএ আইনের ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিচারের আবেদন করা হয়েছিল। বিচারক তা মঞ্জুর করেছেন। সেই অনুযায়ী এ দিন বেলা পৌনে ১টায় মুখ্য বিচারকের আদালতের ঘরের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। দরজা খোলে প্রায় এক ঘণ্টা পরে।

মামলার প্রথম সাক্ষী আবদুল গফ্ফর এখন হাওড়ার জগাছা থানার আইসি। তাঁর এফআইআরের ভিত্তিতেই মামলা শুরু হয়েছে। ফলে তিনিই খাগড়াগড় মামলার অভিযোগকারী। শুক্রবারই ছিল তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন। তবে গফ্ফর হাজির হতে পারেননি। আদালত সূত্রের খবর, এ দিন সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আবদুল গফ্ফরকে প্রথমে প্রশ্ন করেন সরকার পক্ষের কৌঁসুলি শ্যামল ঘোষ, তার পরে আসামি পক্ষের আইনজীবীদের অন্যতম মহম্মদ শাহজাহান হোসেন। দুই মহিলা-সহ ধৃত ২০ জনকে হাজির করানো হয়েছিল এজলাসে। তাদের মধ্যে যে তিন জনকে তিনি বিস্ফোরণস্থলে দেখেছিলেন তাদের শনাক্ত করেন গফ্ফর। আঙুল তুলে দেখান, কাঠগড়ায় বাঁ দিক থেকে দাঁড়ানো তৃতীয় জনকে তিনি ঘটনাস্থলে দেখেছিলেন। বিচারক জিজ্ঞেস করায় ওই যুবক জানায়, তার নাম আবুল হাকিম।

এনআইএ সূত্রের খবর, বিস্ফোরণে জখম, রক্তাক্ত আবদুল হাকিমকেই প্যাসেজ থেকে টেনে ঘরে নিয়ে গিয়েছিল রাজিয়া বিবি ও আলিমা বিবি। ধৃত ওই দুই মহিলা এ দিন আদালতে হাজির থাকলেও তাদের কাঠগড়ায় তোলা হয়নি বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। দু’জনেই তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে বিচারকের ডান দিকে, একটু দূরে বসেছিল মহিলা পুলিশদের প্রহরায়। গফ্ফর ওই দু’জনকেও শনাক্ত করেন। তিনি জানান, মুমূর্ষু অবস্থায় বিস্ফোরণস্থলে পড়ে থাকা দু’জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথেই এক জন মারা যায়। তার নাম শাকিল গাজি। পরে মারা যায় আরও এক জন। সে জানিয়েছিল, তার নাম স্বপন মণ্ডল। পরে এনআইএ তদন্তে জানা যায়, ওই ব্যক্তি আসলে বীরভূমের কীর্ণাহারের আবদুল করিম।

বর্ধমানের খাগড়াগড়ে ওই বিস্ফোরণ হয় ২০১৪-র ২ অক্টোবর। তদন্তে বেরোয়, পশ্চিমবঙ্গের মাটিকে ব্যবহার করে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি বাংলাদেশে ধারাবাহিক নাশকতার প্রস্তুতি চালাচ্ছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল, সে দেশের গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা। আদালতে গফ্ফর এ দিন জানিয়েয়েছেন, পার্থসারথি মণ্ডল নামে এক টহলদার পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে তিনি খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণ হওয়ার খবর পান। আর পুলিশের মধ্যে ঘটনাস্থলে প্রথম পৌঁছন বর্ধমান থানার তদানীন্তন এএসআই বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়।

এই মামলার পরের শুনানি হবে ২৩ সেপ্টেম্বর। সে দিন ও তার পরে ২৬ সেপ্টেম্বর গফ্ফরের সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। এনআইএ সূত্রের খবর, এই মামলায় সাক্ষী মোট ৪৩৩ জন।

Khagragarh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy