ফাঁদ: উলুবেড়িয়ায় বিপন্ন মাছরাঙা। ছবি: সুব্রত জানা
কাকতাড়ুয়া নেই। জাল রয়েছে। কাকতাড়ুয়া পাখি ধরত না। জাল পাখি ধরে। পাখি মরেও যায়। বেজায় খুশি উলুবেড়িয়ার বহু পুকুর-মালিক। পুকুরের উপরে জাল লাগানোয় মাছ বাঁচছে। টাকা আসছে। তাই কোন পানকৌড়ি মরল আর কোন মাছরাঙার ডানা ছিঁড়ল, দেখার সময় নেই তাঁদের!
গত কয়েক বছর ধরেই উলুবেড়িয়ার নানা গ্রামের বহু ব্যক্তি-মালিকানাধীন পুকুর জাল বা সরু নাইলনের সুতো দিয়ে ঘিরে রাখা হচ্ছে। খাবারের খোঁজে এসে কত মাছরাঙা-পানকৌড়ির যে ওই জাল-সুতোয় আটকে প্রাণ গিয়েছে হিসেব নেই। বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন স্থানীয় পাখিপ্রেমীরা। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপেরও দাবি তুলেছেন তাঁরা।
বন দফতরের উলুবেড়িয়া রেঞ্জ অফিসার উৎপল সরকার বলেন, ‘‘ঘুড়ির সুতোয় পাখি আটকে মারা গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জেল বা জরিমানা হতে পারে। পুকুরের উপর জাল বা সুতোয় ঢেকে রাখার ফলে পাখির মৃত্যু হচ্ছে এটা ঠিকই। কিন্তু এটা আটকানোর আইন আছে বলে জানা নেই। মানুষকে বোঝাতে আমরা গ্রামে গ্রামে সচেতনতা শিবির করব।’’
বছর কুড়ি আগে খেতে বা পুকুরের ধারে পাখি তাড়াতে কাকতাড়ুয়া দেখা যেত। কিন্তু এখন বহু পুকুর বা জলাশয়ের উপর দিক ঘিরে রাখা হয় জাল-সুতোয়। যাতে মাছ খেতে মাছরাঙা, পানকৌড়ি বা বক নামতে না-পারে।
‘‘ঘিরব না? প্রতি বছর অনেক টাকার মাছ ছাড়ি। কিন্তু পাখিতে খেয়ে নেয়। বছর শেষে কিছুই লাভ দেখতে পাই না। তাই পুকুর ঢেকেছি।’’— বললেন মধুবাটী গ্রামের এক পুকুর-মালিক। এর জন্য যে পাখি আটকে মারা যাচ্ছে? পুকুর-মালিক চুপ।
উলুবেড়িয়ার চিকিৎসক মৃত্যুঞ্জয় খাঁড়া একজন পক্ষীপ্রেমী। তিনি বলেন, ‘‘জাল বিছিয়ে পাখিদের মরণফাঁদে ঠেলে দেওয়ার প্রবণতা আইন করে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। মাছরাঙা বা পানকৌড়ির মতো পাখি শুধু মাছ খায় না, পুকুরের অনেক পোকামাকড়ও খায়। তাতে মাছ চাষেরই উপকার হয়। এমন মরণফাঁদের জন্য একদিন এখানকার পাখি হারিয়ে যাবে। শীতে পরিযায়ী পাখিও আসবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy