ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ আটকাতে এখন থেকেই সতর্ক কলকাতা পুরসভা। পুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে দীর্ঘদিন ধরে তালাবন্ধ অবস্থায় থাকা বাড়িগুলি চিন্তা বাড়িয়েছে তাদের। এমন বহু বাড়িতেই জমা জলে ও আবর্জনায় তৈরি হয়েছে মশার আঁতুড়ঘর।
পুর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা জানাচ্ছেন, অতীতে তালাবন্ধ বাড়ি খুলিয়ে বা পরিত্যক্ত
কারখানা চত্বরে হানা দিয়ে প্রচুর মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু সমস্যা হল, মালিকের খোঁজ না পেলে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কোনও বাড়িতে ইচ্ছে মতো তালা ভেঙে ঢুকতে পারেন না পুরসভার কর্মীরা। এমনকি, অনুমতি ছাড়া মশা মারার স্প্রে-ও করার নিয়ম নেই। তেমন প্রয়োজনে তালা ভাঙতে হলে সে সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু অভিযোগ, শহরের অনেক থানাই পুরসভাকে সাহায্য করছে না। এ বার তাই মশা দমনে শহরের সমস্ত থানার সাহায্য চেয়ে কলকাতার নগরপালকে চিঠি দিলেন পুরসভার কমিশনার।
দীর্ঘদিন ধরে তালাবন্ধ থাকা বাড়িগুলিতে তালা ভেঙে ঢোকার নিদান রয়েছে কলকাতা পুরসভার ১৯৮০ সালের পুর আইনে। সেই আইন অনুযায়ী, তালা ভেঙে বাড়িতে ঢোকার সময়ে দু’জন সাক্ষী থাকবেন। এক জন স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি এবং পুলিশের তরফে কোনও প্রতিনিধি। আইন অনুযায়ী, পুরসভা বাড়ির ভিতরে মশা মারার স্প্রে করার পরে পুনরায় নতুন তালা ঝুলিয়ে দেবে। ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘শহরের অনেক তালাবন্ধ বাড়ি, কারখানায় আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা ঢুকতে পারেন না। পুলিশের সাহায্য চাইলেও অনেক থানার সাহায্য মেলে না। নাগরিক স্বার্থে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করার সময়ে স্থানীয় থানার পুলিশের উচিত পাশে দাঁড়ানো।’’
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শহরের অনেক তালাবন্ধ বাড়িতে ঢুকে আমরা পরিষ্কার জমা জলে ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা পেয়েছি। দিনের পর দিন বন্ধ থাকা ওই সমস্ত বাড়ি, কারখানা নিয়ে আমাদের চিন্তা বেশি। অবিলম্বে তালা ভেঙে পরিদর্শন করা জরুরি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)