Advertisement
১৭ মে ২০২৪

উড়ে যাচ্ছে কত, কড়া হিসেব বিমানবন্দরে

পুরনো পাঁচশো–হাজারের বান্ডিল নিয়ে পাঁচ দিনে ১৩ জন যাত্রী কলকাতা থেকে উড়ে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রায় ছ’কোটি টাকার বাতিল নোট শহর ছেড়েছে বলে আয়কর দফতরকে বার্তা দিয়েছে সিআইএসএফ, যাদের উপরে কি না কলকাতা বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ভার।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২১
Share: Save:

পুরনো পাঁচশো–হাজারের বান্ডিল নিয়ে পাঁচ দিনে ১৩ জন যাত্রী কলকাতা থেকে উড়ে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রায় ছ’কোটি টাকার বাতিল নোট শহর ছেড়েছে বলে আয়কর দফতরকে বার্তা দিয়েছে সিআইএসএফ, যাদের উপরে কি না কলকাতা বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ভার।

পাশাপাশি ক’দিনে কলকাতা বিমানবন্দরে নামা কিছু যাত্রীকে মোটা অঙ্কের বাতিল নোট-সহ আটক করেছে সিআইএসএফ। এঁদের দু’জনকে আয়কর শেষেমেশ গ্রেফতার করে। এক জনের কাছে ছিল সওয়া কোটি নগদ। ১১ নভেম্বর তিনি গ্রেফতার হন। দ্বিতীয় ব্যক্তি ধরা পড়েছেন ১৪ নভেম্বর, ২৮ লাখের নোট সমেত। কেউই টাকার হিসেব দিতে পারেননি বলে সূত্রের দাবি।

বস্তুত এই মুহূর্তে দেশের প্রতিটি বিমানবন্দরে সিআইএসএফের তীক্ষ্ণ নোট-নজরদারি বলবৎ। বিমানে ওঠার আগে নিয়মমাফিক খানা-তল্লাশিতে যে সব যাত্রীর হেফাজতে বিরাট অঙ্কের নগদ টাকার হদিস মিলছে, তাঁদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সঙ্গে সঙ্গে গন্তব্যের বিমানবন্দরে পৌঁছে দিচ্ছে সিআইএসএফ। তথ্য মানে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কোন বিমানসংস্থার উড়ানে যাচ্ছেন, ফ্লাইট নম্বর, সিট নম্বর ইত্যাদি। চিহ্নিত যাত্রীদের কিছু বলা হচ্ছে না। তবে বিমান মাটি ছুঁতেই সেখানকার সিআইএসএফ জওয়ানেরা ওঁদের ধরে তুলে দিচ্ছেন আয়করের হাতে।

কলকাতা বিমানবন্দরের খবর: ১১ নভেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এমন তেরো জনকে এ ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কেউ গিয়েছেন পটনা, কেউ আইজল, কেউ বা বেঙ্গালুরু। ১১ নভেম্বর এক জন পাঁচশো-হাজারের নোটে তিন কোটি টাকা নিয়ে বাগডোগরা গিয়েছেন। এক জনের কাছে ছিল চারশো গ্রাম সোনা। তবে বাতিল নোটের বান্ডিল নিয়ে কেউ বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন বলে খবর নেই। বিমান ধরতে যাওয়া যাত্রীদের দেহ ও ব্যাগপত্র তল্লাশি করাটা নিয়ম। কঠোর ভাবে তা মানা হয়। উদ্দেশ্য— কারও হাতব্যাগে এমন যেন কিছু না থাকে, যার সাহায্যে বিমান ছিনতাই বা অন্য ধরনের বিপত্তি ঘটানো যায়। সেই ‘নিষিদ্ধ’ বস্তুর তালিকায় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ফল কাটার ছুরি, নেলকাটার, কাঁচি, দেশলাই— সবই রয়েছে। পাশাপাশি তল্লাশিতে কারও সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান মিললে তা-ও আয়করকে জানিয়ে দেওয়াটা দস্তুর। ‘‘এখন খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে, কারও কাছে বেশি পরিমাণ বাতিল নোট থাকছে কি না।’’— বলেন এক সিআইএসএফ-কর্তা। কী ভাবে?

সূত্রের খবর: লোকজন বাতিল নোট নিয়ে যাচ্ছেন মূলত হ্যান্ডব্যাগে ভরে। এক্স-রে মেশিনে তা ধরা পড়লে তখনই নোটের সংখ্যা গুনে দেখা হচ্ছে। টাকার অঙ্ক পাঁচ লাখ ছাড়ালে সংশ্লিষ্ট যাত্রী পড়ছেন সন্দেহের তালিকায়। তাঁকে অবশ্য কিছু বলা হচ্ছে না। তিনি যথারীতি বিমানে উঠছেন। ইতিমধ্যে সিআইএসএফ যোগাযোগ করছে তাঁর গন্তব্যের শহরের বিমানবন্দরে, সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীদের যাত্রীটি সম্পর্কে তথ্য আগাম জানিয়ে দিচ্ছে। বিমান ওখানে পৌঁছালে তাঁকে নামিয়ে শুরু হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ। তার পরে তুলে দেওয়া হচ্ছে আয়কর দফতরের হাতে।

একই ভাবে অন্যান্য শহরের বিমানবন্দর থেকেও তথ্য আসছে কলকাতায়। সেই মতো ব্যবস্থা হচ্ছে। আয়করের এক শীর্ষ কর্তা বলছেন, ‘‘বড় অঙ্ক মানেই যে কালো টাকা, তা নয়। যাঁরা বৈধ প্রমাণ দেখাতে পারছেন, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

surveillance Kolkata airport
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE