Advertisement
E-Paper

গুজব রুখতে নয়া দাওয়াই, সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেও হতে পারে জেল

কেন্দ্রের বার্তায় রাজ্য প্রশাসনকে আরও নজরদারি বাড়াতে বলে হয়েছে। বিভিন্ন প্রান্তে সচেতনতা বাড়াতে সরকারকে উদ্যোগী হতে বলে হয়েছে যাতে এ ধরনের গুজব ছড়ানো আটকানো যায়।

সিজার মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ২১:২৯
কলকাতা পুলিশের পোস্ট।

কলকাতা পুলিশের পোস্ট।

‘ফরওয়ার্ডেড অ্যাজ রিসিভড্’— এখন থেকে এই বলে পার পাওয়া কঠিন!

সম্প্রতি অসম, ত্রিপুরা এবং মণিপুরে গুজবের জেরে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটার পর সোশ্যাল মিডিয়াতে গুজব ছড়ানো রুখতে আরও কঠোর হচ্ছে রাজ্য পুলিশ।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকেও সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রের বার্তায় রাজ্য প্রশাসনকে আরও নজরদারি বাড়াতে বলে হয়েছে। বিভিন্ন প্রান্তে সচেতনতা বাড়াতে সরকারকে উদ্যোগী হতে বলে হয়েছে যাতে এ ধরনের গুজব ছড়ানো আটকানো যায়।

রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষকর্তা বলেন, কেন্দ্রের এই বার্তার অনেক আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। আর সেই নজরদারি প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, “এত দিন বহু ক্ষেত্রেই এ রকম বিভিন্ন প্ররোচনা ছড়ানো বা উস্কানি দেওয়া গুজবের গোড়া খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, অনেকে সেই মেসেজ অনেক বার করে ফরোয়ার্ড বা শেয়ার করেছেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলেই তাঁরা বলতেন, আমরা যেমন পেয়েছি তেমনই ফরোয়ার্ড করেছি।” কিন্তু এখন থেকে এই কথা বললে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ওই গোয়েন্দাকর্তা।

কিন্তু কী ভাবে এই নজরদারি করা হচ্ছে?

মনিটরিং সেল

রাজ্য, কলকাতা পুলিশ এবং বিভিন্ন কমিশনারেটের বিশেষ নজরদারি টিম আছে যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে নজর রাখে।

এর বাইরে আছে সিআইডি এবং রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের নজরদারি দল

এরা মূলতঃ প্রযুক্তির সাহায্যে নজর রাখে

হিউম্যান ইনটেলিজেন্স

এই নজরদারির কাজে একটা বড় ভূমিকা দেওয়া হয়েছে

১) রাজ্য জুড়ে থাকা সিআইডি ভলান্টিয়ারদের

২) বিভিন্ন থানায় মোতায়েন সিভিক ভলান্টিয়াররাও এই কাজে যুক্ত

রাজ্য সিআইডির এক কর্তা বলেন, “প্রযুক্তির পাশাপাশি এই সিআইডি ভলান্টিয়ারদের একটা বড় ভূমিকা আছে এই ধরনের গুজব রোধে। তাঁরা প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও সরাসরি সিআইডির নির্দিষ্ট সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে খবর পৌঁছে দিতে পারবেন সিআইডি-র সদর দফতরে।” এই সিআইডি কর্তার দাবি, এঁদের মাধ্যমে শুরুতেই রুখে দেওয়া যাবে এই ধরনের গুজব।

রাজ্য পুলিশের মতো কলকাতা পুলিশের একটি বিশেষ মনিটরিং সেল রয়েছে যারা এই নজরদারির কাজ করে। এক শীর্ষকর্তা বলেন, “ক’দিন আগেই কলকাতার রাস্তায় একটি পোস্টার দেখা যাচ্ছিল যেটায় ধর্মীয় উস্কানি ছিল। সেই পোস্টার আমরা সরিয়ে দিই কারণ সেটা যে কোনও সময়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে যেতে পারত।”

এর পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে নিয়মিত প্রচার চালানো হচ্ছে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য। সেখানে সম্প্রতি বার বার সাবধান করা হচ্ছে যাতে সোশ্যাল মিডিয়াতে পাওয়া কোনও তথ্য যাচাই না করে কেউ ফরোয়ার্ড বা শেয়ার না করেন।

আরও পড়ুন: তিন হাজারেরও কমে নতুন ফোন জিও-র, জেনে নিন ফিচার

কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “সম্প্রতি মাদ্রাজ হাইকোর্ট সোশ্যাল মিডিয়াতে এক মহিলা সাংবাদিকের অসম্মান সংক্রান্ত মামলায় অন্যতম অভিযুক্তের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কেউ কোনও বার্তা শেয়ার বা ফরোয়ার্ড করলে ধরে নিতে হবে তিনি সেই বার্তার বক্তব্যকে সমর্থন করেন।”

আর সেই বার্তা দিতে এ ধরনের ঘটনায় আরও কড়া পুলিশ। সম্প্রতি ইদের ছুটিকে কেন্দ্র করে একটি ভুয়ো সরকারি ছুটির বি়জ্ঞপ্তির তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। সেই তদন্ত করতে গিয়েই উঠে আসে রাজস্থানের শীর্ষ আমলা সঞ্জয় দীক্ষিত ওই ভুয়ো বিজ্ঞপ্তি শুধু শেয়ারই করেননি, মন্তব্যও করেছেন। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ জেরার জন্য ডেকে পাঠায় দীক্ষিতকে। তিনি হাজিরা দেননি, কিন্তু ওই মামলাতেই গিরিশ পার্কের এক ব্যক্তিকে ম্যারাথন জেরা করা হয় লালবাজারে সমন করে।

আরও পড়ুন: নন্দীগ্রাম কাণ্ডে লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে তদন্তে সিআইডি

কলকাতা পুলিশের এক কর্তার স্পষ্ট কথা: “এ বার থেকে শেয়ার করলেও জেরার মুখে পড়তে হবে।” আর পুলিশকর্তাদের আশা, পুলিশি জেরা এড়াতে এ বার থেকে ভেবেচিন্তে শেয়ার বা ফরোয়ার্ড করবেন মানুষ, এড়ানো যাবে গুজবের ঢেউ।

Cyber Crime Kolkata Police Social Media, Media
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy