Advertisement
E-Paper

আসানসোলের মেয়রকে টিয়া পাখি নিয়ে হাওড়া ব্রিজে বসার পরামর্শ বাবুলের

ঘটনার সূত্রপাত পঞ্চায়েত ভোটে এক বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে। গত ৭ এপ্রিল গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে দলীয় এক প্রার্থী মনোনয়ন দিতে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৮ ২১:৪৩
কলকাতা হাইকোর্ট। —ফাইল চিত্র

কলকাতা হাইকোর্ট। —ফাইল চিত্র

মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে ভোজালির কোপ খেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী। ঘটনাস্থলে নাকি তখন তৃণমূল পরিচালিত আসানসোল পুরসভার মেয়র ছিলেন। ঘটনাটি যখন ঘটছে, সেই সময়ের একটি ভিডিয়োও প্রমাণ হিসাবে বিজেপি প্রকাশ্যে আনে। সেখানে মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির উপস্থিতি দেখা গিয়েছে বলে বিজেপির দাবি। কিন্তু তারপরেও বিজেপির অভিযোগ নেয়নি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। অবশেষে আসানসোলের মেয়রের বিরুদ্ধে পুলিশকে এফআইআর-এর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

মঙ্গলবারের মধ্যে তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি প্রতীকপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই নির্দেশের কথা জানার পর মেয়র বলেছেন, ‘‘আগামী লোকসভা ভোটে জিততে পারবেন না বুঝেই আড়াল থেকে কলকাঠি নেড়েছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।’’ বাবুলের পাল্টা তোপ, ‘‘অর্ধশিক্ষিত লোকদের সঙ্গে যুক্তি তর্কে জেতা যায় না। তাই আদালতই একমাত্র ভরসা।’’

ঘটনার সূত্রপাত পঞ্চায়েত ভোটে এক বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে। গত ৭ এপ্রিল গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে দলীয় এক প্রার্থী মনোনয়ন দিতে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। সেই সময় মহকুমা শাসকের দফতরের সামনেইআক্রান্ত হন বিজেপি নেতা লক্ষণ ঘোড়ুই। মারধরের পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় তাঁকে।অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপির আরও অভিযোগ, সেই সময় ঘটনাস্থলে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার একটি ভিডিও মেলে এবং তাতেও ঘটনাস্থলে মেয়রের ছবি ধরা পড়ে বলে বিজেপির দাবি।

আরও পড়ুন: বজ্রপাতে বাড়ছে মৃত্যু, সতর্ক করবে প্রযুক্তি

আরও পড়ুন: অন্য দলে যাচ্ছেন? খেপে গেলেন ডালু​

সেই ঘটনায় মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের আর্জি নিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। বিজেপির দাবি, ভিডিও দেখানোর পরেও পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। এরপরেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। সেই মামলার শুনানির পর বুধবার বিচারপতি প্রতীকপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়রের বিরুদ্ধে পুলিশকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তদন্ত কতদূর এগিয়েছে, সেই সংক্রান্ত স্টেটাস রিপোর্টও মঙ্গলবারের মধ্যেই জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।

হাইকোর্টের নির্দেশের পরই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘আদালতে যাওয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজকর্মের পিছনে রয়েছেন আসানসোলের সাংসদ। উনি জানেন, আগামী লোকসভা ভোটে তিনি গো-হারা হারবেন। তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। পিঠ বাঁচাতে এই সব করছেন। দেখানোর চেষ্টা করছেন, আমাদের বাধায় তিনি কাজ করতে পারেননি। পঞ্চায়েতের ফলের পরই বোঝা গিয়েছে আসানসোলে বাবুলের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই।’’

আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে মেয়র আরও বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করলেই আসল সত্যটা বেরিয়ে আসবে।’’ জবাবে বাবুল সুপ্রিয়র কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল নেতারা এখন নানা রকম ভবিষ্যদ্বাণীতে ব্যস্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে তাঁরা আগাম জানিয়ে দিচ্ছেন। আমি বলছি, এতই যদি ভবিষ্যৎ বলতে পারেন, তাহলে রাজনীতিটা ছেড়ে দিন। একটা টিয়া পাখি নিয়ে হাওড়া ব্রিজে বসুন।’’ একইসঙ্গে গায়ক সাংসদ বলেন, ‘‘কত ধানে কত চাল, আসানসোলের মেয়র সেটা বুঝতে পারবেন।’’ বাবুলের আরও সংযোজন, ‘‘আসানসোলের মানুষ খুব ভাল ভাবে জানেন, কে কী করেছেন। সব কাজই যদি সাংসদের করার কথা থাকত, তাহলে সাংসদকে পাঁচ কোটি টাকা না দিয়ে ৩০০ কোটি টাকা দিত। আমি তো আমার কাজের হিসেব সব সময় দিচ্ছি। আসানসোল পুরনিগম কী করছে, সেটা একটু ওঁদের জানাতে বলুন।’’

Babul Supriyo Asansol TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy