কিন্তু দক্ষিণ কলকাতার ১৩৪ ও ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডে বাম-কংগ্রেসের কেউই প্রার্থী দিতে পারেনি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কলকাতা পুরসভার সব ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারেনি বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। পৃথক ভাবে ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণা করেছে ১২৫টি ওয়ার্ডে। আর বামফ্রন্ট প্রার্থী দিয়েছে ১২৮টি ওয়ার্ডে। কংগ্রেসের প্রার্থী নেই ১৯টি ওয়ার্ডে, বামেদের ১৬টিতে। কিন্তু দক্ষিণ কলকাতার ১৩৪ ও ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডে আবার এই দু’পক্ষের কেউই প্রার্থী দিতে পারেনি। আর এই দু’টি ওয়ার্ডে সমর্থনের প্রশ্নে বিড়ম্বনায় পড়েছে সমর্থকেরা। বেহালা পূর্ব ও কলকাতা বন্দর বিধানসভার অন্তর্গত এই দু’টি ওয়ার্ডে কাকে ভোট দেবেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে এই দু’টি ওয়ার্ড তৃণমূলের দখলে। ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর শামস ইকবাল ও ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর রঘুনাথ পাত্র। বাম ও কংগ্রেস দুই দলের নেতা-কর্মীরা এত দিন এই ওয়ার্ডগুলিতে শাসকদল তৃণমূলকে হারানোর কথা বলে এসেছেন। তাই তাঁদের আবার বিজেপি-র বিরোধিতা করে তৃণমূলকে ভোট দিতে বলা জেলা নেতৃত্বের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই সূত্রের খবর। এমতাবস্থায় বিকল্প পথে কী ভাবে বিজেপি-তৃণমূল দু’দলের বিরুদ্ধে নেতা-কর্মীদের ভোট দিতে বলা যায়, তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করেছে দুই শিবির।
যে ১৯টি ওয়ার্ডে কংগ্রেসের প্রার্থী নেই, এবং যেখানে বামেদের ১৬টিতে প্রার্থী নেই, সেখানে নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েই আলোচনা চলছে। অন্যান্য ওয়ার্ডগুলিতে উভয়েই ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ভোট দেওয়ার কথা বলে কার্যত পরস্পরকে সমর্থনের বার্তা দিয়েছে। কিন্তু, এই দু’টি ক্ষেত্রে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি দুই শিবির। এমন পরিস্থিতিতে সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার বলেছেন, ‘‘যেহেতু ওই দুটি ক্ষেত্রে বামফ্রন্টের এবং কংগ্রেস উভয়েরই প্রার্থী নেই, তাই দেখতে হবে কোনও ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক নির্দল প্রার্থী রয়েছেন কি না। সে ক্ষেত্রে বিজেপি ও তৃণমূলকে হারাতেই জোর দেব আমরা।’’ সাংগঠনিক বিভাগ অনুযায়ী ১৩৪ ও ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডটি কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা (সদর) কমিটির অধীনে। সেই জেলার সভাপতি মনোরঞ্জন হালদার বলেছেন, ‘‘আমরা জেলা কমিটি এ বিষয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেব। তবে তার অনুমোদন নেওয়া হবে প্রদেশ কংগ্রেস থেকেই।’’ যদিও কলকাতার ভোট কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, যেহেতু ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস, তাই বিজেপি-বিরোধী অবস্থান নিতে ওই দু’টি ওয়ার্ডে কংগ্রেসের সমর্থন তৃণমূলের দিকেও যেতে পারে। আবার অন্য পক্ষের মত, যে ভাবে একের পর রাজ্যে কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল নিজের সংগঠন বিস্তার শুরু করেছে, তাতে তৃণমূল প্রার্থীকে হারাতেই তাঁরা বেশি মনোযোগী হতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy