ট্রাফিক সিগন্যাল ভেঙে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যাচ্ছিল যাত্রী-বোঝাই বাস। উল্টো দিক থেকে একটি ছোট গাড়ি চলে আসায় সেটিকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেল বাসটি। বুধবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে প্রগতি ময়দান থানার পরমা আইল্যান্ডে। এই ঘটনায় মারা যান বাসের যাত্রী এক যুবক।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় বাসের ন’জন যাত্রী আহত হন। হাসপাতালে তাঁদের এক জন মারা যান। তবে রাত পর্যন্ত মৃতের পরিচয় জানা যায়নি। বাকি আট যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিত্সার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাসটির চালক পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের গড়িয়া-বেলুড় মঠ রুটের ওই বাসটি ৩৫ জন যাত্রী নিয়ে বেলুড় মঠের দিকে যাচ্ছিল। পরমা আইল্যান্ডের কাছে ট্রাফিক সিগন্যালে অন্যান্য গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ওই বাসটি সিগন্যাল ভেঙে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলে। পুলিশ জানিয়েছে, ঠিক সেই সময়েই উল্টো দিক থেকে একটি ছোট গাড়ি আসছিল। আচমকা গাড়িটি মুখোমুখি চলে আসাতেই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ছোট গাড়িটিকে পাশ কাটাতে গিয়ে চালক বাসটিকে আচমকা বাঁ দিকে ঘোরাতে যান। তখনই মুখোমুখি সংঘর্ষের পরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে রাস্তার উপরেই উল্টে যায় বাসটি। ঘটনায় সময়ে রাস্তায় আরও অনেকগুলি গাড়ি ছিল। ফলে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল বলে মনে করছেন এলাকাবাসীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ। বাসটিতে ৩৫ জন যাত্রী ছিলেন। বাসটি উল্টে যাওয়ায় সকলেই ভিতরে আটকে পড়েন। বাসের ইমার্জেন্সি গেট ও পিছনের কাচ ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, সংঘর্ষের জেরে ছোট গাড়িটির সামনের অংশ দুমড়ে যায়। তবে যাত্রীরা রক্ষা পান।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার জেরে বাইপাসের ওই অংশে সাময়িক যানজট হয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আধ ঘণ্টার মধ্যেই বাসের সমস্ত যাত্রীদের উদ্ধার করে রেকার দিয়ে বাসটিকে তুলে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
দুর্ঘটনায় মাথায় চোট পেয়েছেন বাসের এক যাত্রী সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়। ডানলপে যাওয়ার জন্য তিনি রুবির সামনে থেকেই ওই বাসটিতে উঠেছিলেন। সুমনবাবু বলেন, “আচমকা সামনে একটা ছোট গাড়ি চলে আসে। খুব জোর একটা ঝাঁকুনি, তার পরেই বাস উল্টে যায়।”
আর এক যাত্রী শতরূপা দত্ত বলেন, “আমি সিটে বসেছিলাম। কী হয়েছে, ঠিকমতো বুঝতে পারিনি। তবে আচমকা একটা ঝাঁকুনি লাগতেই সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা আমার ঘাড়ের উপরে পড়ে যান।” ঘটনার পরে প্রায় অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন শতরূপা। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। মাথায় চোট পেয়েছেন তিনিও।