Advertisement
১৭ মে ২০২৪

নড়ে বসল পুলিশ, হরিদেবপুর-কাণ্ডে ধৃত দুই অভিযুক্ত

চার চাকার ছোট গাড়িটা সবে আলিপুর আদালত থেকে বেরিয়ে গোপালনগর মোড়ের কাছে পৌঁছেছে। হঠাৎই পথ আটকাল একটা বড় গাড়ি। সেখান থেকে নেমে এলেন জনা চারেক যুবক। ছোট গাড়িতে বসা দুই যুবককে কার্যত ঘাড় ধরে তুললেন বড় গাড়িতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৫ ০০:৩৫
Share: Save:

চার চাকার ছোট গাড়িটা সবে আলিপুর আদালত থেকে বেরিয়ে গোপালনগর মোড়ের কাছে পৌঁছেছে। হঠাৎই পথ আটকাল একটা বড় গাড়ি। সেখান থেকে নেমে এলেন জনা চারেক যুবক। ছোট গাড়িতে বসা দুই যুবককে কার্যত ঘাড় ধরে তুললেন বড় গাড়িতে। পলকের মধ্যেই দ্রুত গতিতে চলে গেল গাড়িটি। ঘটনার আকস্মিকতায় ততক্ষণে হকচকিয়ে গিয়েছেন ছোট গাড়ির চালক। হতবাক আশপাশে দাঁড়ানো লোকজনও।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দুই যুবকের নাম দুর্গাপ্রসাদ সিংহ ও কালীপ্রসাদ সিংহ। সিনেমার শ্যুটিংয়ের কায়দাতেই বৃহস্পতিবার ওই দুই ভাইকে পাকড়াও করেছে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখা। অভিযোগ, ৮ জুলাই হরিদেবপুরের কবরডাঙা মোড়ে এই দুই ভাইয়ের সঙ্গেই সোনারপুর রেনিয়ার দুষ্কৃতী নান্টের দলের গোলমাল লেগেছিল। ধুন্ধুমার বন্দুকবাজিতে নিহত হন রাহুল মজুমদার নামে এক যুবক। পুলিশের দাবি, ওই গোলমালে দুর্গা ও কালীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘এ দিন বিকেলে আলিপুরের গোপালনগর মোড় থেকে দুর্গা ও কালী সিংহকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

হরিদেবপুর-কাণ্ডের পরে মাস খানেক কাটলেও এত দিন ওই এলাকাতেই বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছিল ওই দুই ভাই। কিন্তু তাদের টিকিটিও ছোঁয়নি পুলিশ। তা হলে এ দিন হঠাৎ গ্রেফতার করা হল কেন?

লালবাজারের অন্দরের খবর, পুলিশ ও শাসক দলের একাংশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যই কালী ও দুর্গাকে গ্রেফতার করা হচ্ছিল না। এ নিয়ে ক্ষোভ ছিল পুলিশের অন্দরেও। বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার পত্রিকায় এই খবর প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে লালবাজারের শীর্ষ মহল। এক পুলিশকর্তা জানান, তড়িঘড়ি কালী-দুর্গাকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তার পরেই গুন্ডা দমন শাখার অফিসারেরা অভিযান চালিয়ে ওই দুই ভাইকে পাকড়াও করেন। পুলিশ সূত্রের দাবি, এ দিন বিকেলে আলিপুর আদালতে একটি কাজে এসেছিল দুই ভাই। এই খবর পেয়ে আর দেরি করেননি গোয়েন্দারা।

লালবাজার সূত্রের খবর, এক সময়ে অটোচালক হিসেবে জীবন শুরু করা কালী ও দুর্গার সঙ্গে শাসক দলের একাংশের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। কবরডাঙার ওই পানশালাটি খাতায়-কলমে তিন ব্যক্তির মালিকানায় থাকলেও তা বকলমে চালাত দুর্গা ও কালী। পানশালার পুলিশি ছাড়পত্র ছিল না। আইন ভেঙে নাচগানের আসরও বসত। সেখানেই এক নর্তকীর সঙ্গে নাচগান করা নিয়ে হরিদেবপুর-কাণ্ডের সূত্রপাত বলে পুলিশের একাংশের দাবি।

তদন্তকারীদের একাংশ বলছেন, নান্টের ছোড়া গুলিতেই সে দিন রাজার মৃত্যু হয়েছিল। যদিও নান্টে ও তার শাগরেদরা পুলিশের কাছে দাবি করেছে, দু’পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্গা-কালীও গুলি চালিয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাতে গড়িয়া থেকে অভিযান চালিয়ে অমিত ও কা়ঞ্চন নামে আরও দুই অভিযুক্তকেও পাকড়াও করা হয়েছে। তাদের এ দিন আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে পুলিশি হাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Haridevpur police lalbazar gopalnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE