রবার্তো ডি আন্দ্রিয়া
এ ভাবেই বছর কুড়ি কেটে গেল। রবার্তো ডি আন্দ্রিয়ার গল্পের বয়সও বেড়ে দাঁড়াল কুড়ি।
৯০-এর দশকের গোড়ার দিকের কথা। ইঁদুর দৌড়ে সামিল প্রায় সকলেই। যানবাহনও দৌড়চ্ছে সমান তালে। আর্থিক ভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে শহর কলকাতার ট্রামের তখন বেশ টালমাটাল অবস্থা। তাকে নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন ট্রামপ্রেমীরা। তিলোত্তমার ট্রামকে পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন শহরের বিশিষ্টজনেরা। শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে চিত্রপরিচালক— সকলেই ছিলেন সেই উদ্যোগের তালিকায়। সে সময়েই এক ট্রামপ্রেমী দেবাশিস ভট্টাচার্যের সঙ্গে আলাপ হয় রবার্তোর। তার পর পোস্টার পড়েছিল শহরের ট্রামের গায়ে। সাজানো-গোছানো এক ট্রাম ছুটেছিল বেলগাছিয়া, খিদিরপুর, পার্ক সার্কাস হয়ে গড়িয়াহাটের পথে। পরিবেশ বাঁচাতে ট্রামের ভূমিকা নিয়ে গল্পে-কবিতায় মেতে উঠেছিলেন মেলবোর্নের ‘কনি’ বা ট্রামচালক রবার্তো। রাজপথে ঘুরে ঘুরে শোনানো হয়েছিল ‘ট্রাম কাহিনি’। সমাজ সচেতনতার কথা বলতে শোনা যেত রবার্তোর গলায়।
১৯৯৬ সালে শুরু হয় প্রথম ‘ট্রাম যাত্রা’। তার পর ১৯৯৭, ২০০১, ২০০৫ ঘুরে তা পৌঁছছে ২০১৩-এ। ট্রাম-কথকতার পরিবেশনাও পাল্টেছে বছর বছর। পরিবেশ-বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ থেকে শিশু-স্বাস্থ্য সচেতনতা— সবই উঠে এসেছে তাতে। আবার রবি ঠাকুরের ‘গীতাঞ্জলী’ হয়ে উঠেছে ‘ট্রাম কাহিনি’র থিম।
ট্রাম থিয়েটার
চলতি বছরে কুড়িতে পা দিল ‘ট্রাম যাত্রা’। চলবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নোনাপুকুর ট্রাম ডিপো থেকে শুরু হয়ে এসপ্ল্যানেড, কখনও গড়িয়াহাট, কখনও বা উত্তর কলকাতার হাতিবাগানে। এ বছরে ট্রাম সাজানো হয়েছে এক নতুন থিমে— ‘পরিবেশবন্ধু ট্রাম’। এতে দূষণমুক্ত পরিবেশের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তবে এ প্রজন্মে ট্রামপ্রেমীর সংখ্যা যে হাতেগোনা, তা বলাই যায়। তাই এ বারের ট্রাম যাত্রায় নতুন সংযোজনা— ‘ট্রাম থিয়েটার’। অভিনয়ে ‘হোল নাইন ইয়ার্ডস’ নাট্যদল। সঙ্গে রয়েছেন রবার্তোও। ট্রাম সাজানোও হয়েছে গত কুড়ি বছরের পাল্টে যাওয়া কলকাতার পোস্টারে। নয়া রং লেগেছে ডব্লিউবিটিসি-র ২৪৭ নম্বর ট্রামটির গায়ে।
কুয়াশাভরা শীতের সকালে রঙিন এ হেন ‘ট্রাম যাত্রা’য় সামিল বহু উৎসাহী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy