এক ব্যক্তিকে অপহরণের অভিযোগে দুই ভাইকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম রহিম ও করিম। বৃহস্পতিবার রহিমকে নিউ ব্যারাকপুর থানার লেনিনগড় এবং করিমকে ক্যানিং থেকে ধরা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় রাজু যাদব নামে এক অটোচালককেও।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৫ জুন সোনাগাছির দালালদের সর্দার সুরেশ সাউ অপহৃত হয়েছেন বলে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, অপহরণকারীরা ১ কোটি টাকা চেয়ে ফোন করেছে। পুলিশ জানায়, অপহরণের মামলা দায়ের করা হলেও বড়তলা থানার কাছে কিনারা করার মতো কোন সূত্র ছিল না। ৭ জুন পুলিশ জানতে পারে, সুরেশবাবু ফিরে এসেছেন। জেরায় সুরেশ জানান, ৫ তারিখ সন্ধ্যায় পরিচিত এক জনকে দিয়ে ফোন করিয়ে তাঁকে যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ-এর একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে আসতে বলা হয়। সেখানে গেলে চার যুবক অস্ত্র দেখিয়ে তাঁকে একটি গাড়িতে উঠতে বাধ্য করে। তাঁর মুখও বেঁধে দেয় দুষ্কৃতীরা। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এর পরে সুরেশকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার একটি বস্তিতে।
সোনাগাছির সামনে থেকে অপহরণের ওই ঘটনার পর ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে শহরের নিরাপত্তা এবং পুলিশি নজরদারি। লালবাজারের এক কর্তার মন্তব্য, ওই এলাকায় ২৪ ঘণ্টা পুলিশের কড়া নজরদারি থাকে। তাই কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা লালবাজারের উদ্বেগের কারণ। এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন শাখার হাতে। এক তদন্তকারী জানান, সুরেশকে যে নম্বর থেকে দুষ্কৃতীরা ফোন করেছিল তা বন্ধ ছিল। এমনকী নথিভুক্ত হওয়া ঠিকানাও ছিল ভুয়ো। কিন্তু গত সপ্তাহের শেষে ওই নম্বরের সূত্র ধরেই অপহরণ চক্রের সন্ধান পান তাঁরা। চক্রের বাকিদের খোঁজ চলছে। তাদের খোঁজ মিললে অপহরণে ব্যবহৃত গাড়িটির সন্ধান পাওয়া যাবে বলে ধারণা পুলিশের।
পুলিশ জানায়, একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাদের অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা হয়েছিল বলে ধৃতদের দাবি। তা বাবদ সেখানে কয়েক লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছিল বলে তারা ওই অপরাধের রাস্তা বেছে নিয়েছে। কিন্তু পুলিশ জানতে পেরেছে, মাস দুয়েক আগে সোনাগাছি থেকে একই কায়দায় অপর এক ব্যক্তিকে অপহরণ করেছিল ওই চক্রটি। পরে অপহৃত ব্যক্তি ফিরে আসেন। ফেরার পর সুরেশ পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি মুক্তিপণ বাবদ কোনও টাকা দেননি। তবে লালবাজারের একাংশের দাবি, কয়েক লক্ষ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়েই দুষ্কৃতীরা সুরেশকে ছেড়ে দিয়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি, এর আগেও সুরেশকে কয়েক বার অপহরণের চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। তার কারণ অবশ্য এখনও জানতে পারেননি তদন্তকারীরা।