Advertisement
E-Paper

বিমানবন্দরেই ৩ দিন আটকে বিদেশি যুবক

এখান থেকেই শুরু হয় নাটক। ওই যুবকের কাছে বাংলাদেশের ভিসা ছিল না। তিনি গত ২ সেপ্টেম্বর কলকাতা থেকেই বাংলাদেশের বিমানে করে ঢাকা হয়ে মায়ানমারের ইয়াঙ্গন গিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

তাঁর কাছে ভারতে ঢোকার বৈধ ভিসা ছিল। কিন্তু গতিবিধি সন্দেহজনক ঠেকায় তিন দিন কলকাতা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে বন্দি রইলেন নাইজিরীয় এক যুবক। সেখানে বসেই খাবার খেলেন। শৌচালয় ব্যবহার করলেন। এমনকী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁকে দিল্লি পাঠানোর চেষ্টা করা হলে তিনি বেঁকে বসেন। মঙ্গলবার রাতেও তিনি থেকে যান কলকাতা বিমানবন্দরে।

স্যানিয়াগো ক্রিস্টোফার নামে ৪০ বছরের এই যুবক ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমানের উড়ানে কলকাতায় নামেন। কিন্তু অভিবাসন দফতর তাঁকে ভারতে ঢোকার অনুমতি দেয়নি। কোনও বিদেশিকে যদি সন্দেহবশত ঢুকতে দেওয়া না হয়, তা হলে যে বিমান সংস্থার উড়ানে তিনি ভারতে ঢুকেছেন, তাদের হাতেই তাঁকে তুলে দেওয়া হয়। যে দেশ থেকে তিনি এসেছেন, সেখানেই ফেরত পাঠানো হয়। তাই ৯ তারিখ ক্রিস্টোফারকে বাংলাদেশ বিমানের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতেও বলা হয়।

এখান থেকেই শুরু হয় নাটক। ওই যুবকের কাছে বাংলাদেশের ভিসা ছিল না। তিনি গত ২ সেপ্টেম্বর কলকাতা থেকেই বাংলাদেশের বিমানে করে ঢাকা হয়ে মায়ানমারের ইয়াঙ্গন গিয়েছিলেন। সেখানে সাত দিন থেকে আবার ইয়াঙ্গন থেকে ঢাকা হয়ে কলকাতায় নামেন। তিনি শুধু ইয়াঙ্গন যাতায়াতের জন্যই ঢাকা বিমানবন্দরকে ব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশ বিমানের বক্তব্য, যাঁর
কাছে বাংলাদেশের ভিসা নেই, তাঁকে কী করে তাঁরা বাংলাদেশ নিয়ে
যাবেন? এমনকী, ক্রিস্টোফারের কাছে মাত্র কয়েক দিনেরই মায়ানমারের ভিসা রয়েছে। ফলে, সেখানকার সরকারও তাঁকে আর ঢুকতে দেবে না। এই অবস্থায় ক্রিস্টোফারকে বাংলাদেশে নিয়ে যেতে অস্বীকার করে বাংলাদেশ বিমান।

এই টানাপড়েনের ফলে কলকাতা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই আটকে পড়েন ক্রিস্টোফার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এই তিন ধরে তিনি ক্রমাগত ফোন থেকে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে তাঁর নিজের ভাষায় কী সব বলে গিয়েছেন। সোফায় ঘুমিয়েছেন। আর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ বিমানের অফিসারেরা তাঁকে পালা করে খাইয়ে গিয়েছেন। তাঁকে কিছু জিজ্ঞাসা করলেই তিনি শুধু বলে গিয়েছেন, দেশে ফিরতে চান। এই কারণে গত দু’দিন ধরে দিল্লির নাইজিরীয় দূতাবাসের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ করছিলেন ক্রিস্টোফার।

কেন ঢুকতে দেওয়া হল না তাঁকে?

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, জুলাই মাসের গোড়ায় নাইজিরিয়া থেকে আবুধাবি হয়ে দিল্লি আসেন ক্রিস্টোফার। দু’মাস সেখানেই ছিলেন। এই দু’মাস তিনি দিল্লিতে কী করেছিলেন, সে সম্পর্কে নিশ্চিত নন অভিবাসন দফতরের অফিসারেরা। অভিবাসন দফতর এখন সরাসরি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর অধীনে। ক্রিস্টোফারের কথাবার্তায় তাঁদের সন্দেহ হয়। ক্রিস্টোফারের সঙ্গে দেশ বেড়ানোর ট্যুরিস্ট ভিসা রয়েছে। অভিবাসন দফতরের সন্দেহ, ভারতে আসার পিছনে তাঁর অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল। যে ভাবে ভারতে দু’মাস থাকার পরে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি ইয়াঙ্গন গিয়েছিলেন, তা নিয়েও সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে। কোনও মাদক চোরাচালান চক্রের সঙ্গে ক্রিস্টোফারের যোগ থাকতে পারে বলেই মূল সন্দেহ। তবে, তার কোনও নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

Netaji Subhas Chandra Bose International Airport Arrest কলকাতা বিমানবন্দর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy