E-Paper

সিভিক ভলান্টিয়ারের অঙ্গে নতুন জীবন ফিরে পেলেন তিন জন

বিদেশ কর্মরত ছিলেন কুলপি থানায়। গত ৭ এপ্রিল সকালে স্ত্রীকে নিয়ে সাইকেলে চেপে যাচ্ছিলেন বিদেশ। সেই সময়ে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি গাড়ি সাইকেলে ধাক্কা মারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৫০
A Photograph of the civic volunteer who died

বিদায়: সিভিক ভলান্টিয়ার বিদেশ হালদারকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন থানার আধিকারিকদের। ছবি: সংগৃহীত।

জাতীয় সড়কে এক পথ-দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই। তবে, স্বামীর আঘাত ছিল গুরুতর। জেলার দুই হাসপাতাল ঘুরে তাঁকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকেরা যখন বুঝতে পারেন ওই ব্যক্তির ব্রেন ডেথ হচ্ছে, সেই সময়েই স্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন স্বামীর অঙ্গ দান করার। আর পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার, বিদেশ হালদার নামে ওই যুবকের দেওয়া অঙ্গে নতুন জীবন ফিরে পেলেন তিন জন। তাঁরা প্রত্যেকেই এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

বিদেশ কর্মরত ছিলেন কুলপি থানায়। তাঁর বাড়ি কুলপিরই পশ্চিম গোপালনগরে। গত ৭ এপ্রিল সকালে স্ত্রীকে নিয়ে সাইকেলে চেপে যাচ্ছিলেন বিদেশ। সেই সময়ে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি গাড়ি সাইকেলে ধাক্কা মারে। রাস্তায় ছিটকে পড়েন বিদেশ ও তাঁর স্ত্রী পদ্মরানি হালদার। তবে, আঘাত বেশি লেগেছিল বিদেশেরই। তড়িঘড়ি তাঁকে প্রথমে কুলপি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার ক্রমশ অবনতি হওয়ায় ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে স্থানান্তরিত করা হয় ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে তাঁকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে।

সূত্রের খবর, বিদেশকে ট্রমা কেয়ারের রেড জ়োনে রাখা হয়েছিল। মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাতের জেরে আচ্ছন্ন ছিলেন ওই যুবক। ক্রমশ তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। ১৫ এপ্রিল সকালে চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, ব্রেন ডেথ হচ্ছে বিদেশের। বিষয়টি পরিবারকে জানানো হলে পদ্মরানি সিদ্ধান্ত নেন, স্বামীর অঙ্গ দান করবেন। তিনি বলেন, ‘‘নববর্ষের দিনে স্বামীকে হারানোর খবর শুনলাম। কিন্তু ওঁর অঙ্গে অন্যেরা নতুন জীবন পাবেন। তাতেই ও বেঁচে থাকবে।"

রবিবার সকালে অঙ্গদানে সম্মতি দেন বিদেশের পরিজনেরা। এর পরে রিজিয়োন্যাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন (রোটো)-এর তরফে গ্রহীতা চিহ্নিত করা হয়।জানা যাচ্ছে, ২৭ বছরের এক যুবক ও ২১ বছরের এক তরুণী পেয়েছেন কিডনি। ৪৮ বছরের এক প্রৌঢ় পেয়েছেন যকৃৎ। এ দিন দুপুরের মধ্যে অঙ্গ তোলার কাজ শেষ হয়। রাতের মধ্যে তা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এ দিনই বিদেশের দেহ নিয়ে আসা হয় কুলপি থানায়। সেখানে পুলিশকর্মীরা তাঁকে সম্মান জানান। তাঁদের কথায়, "অত্যন্ত পরোপকারী ছিলেন বিদেশ। মৃত্যুর পরেও থেকে গেলেনমানুষের মধ্যে।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Organ Donation Civic volunteer Dead

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy