Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গির হানা এ বার লেক টাউনে, শিশুমৃত্যু নিয়ে চাপানউতোর

লেক টাউনের এ ব্লকের বাসিন্দা অহর্ষি ধর নামে ওই শিশু রবিবার রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালে মারা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:২৮
অহর্ষি ধর

অহর্ষি ধর

তিন বছরের শিশুর মৃত্যু। আর সেই মৃত্যুকে ঘিরে বিভিন্ন স্তরে দায় ঠেলাঠেলি। রাজ্যের ডেঙ্গি চিত্রে সোমবার সংযোজন হল এই অধ্যায়ের।

লেক টাউনের এ ব্লকের বাসিন্দা অহর্ষি ধর নামে ওই শিশু রবিবার রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালে মারা যায়। খবর জানাজানি হতেই দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান দাবি করেন, পিছিয়ে পড়া এলাকায় মশাবাহিত রোগ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও অভিজাত এলাকায় পুরকর্মীরা মশা মারার কাজ করতে অনেক বাড়িতেই ঢুকতেই পারছেন না। সচেতনতার অভাবেই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আসছে না।

কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ সোমবার সন্ধ্যায় দাবি করেন, অহর্ষিকে মাত্রাতিরিক্ত ফ্লুইড দেওয়া হয়েছিল বলে তার পরিবারের লোকেরা তাঁকে জানিয়েছেন। এর ফলেই শিশুটির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে অতীনবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমরা বারবার হাসপাতালগুলিকে বলি উপযুক্ত চিকিৎসা ও নার্সিং করতে। কথায় কথায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু লিখে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। আমি মনে করি স্বাস্থ্য দফতরের আরও খোঁজ নেওয়া প্রয়োজন।’’ অভিযোগ উড়িয়ে হাসপাতালের অধিকর্তা অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘অতিরিক্ত ফ্লুইড দেওয়া হয়নি। প্রোটোকল মেনেই চিকিৎসা হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক জালিয়াতি থেকে বাঁচাবেন থানার অফিসার

নিয়ন্ত্রণ দূর, নভেম্বরের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও ডেঙ্গির থাবা ক্রমশ শক্ত হচ্ছে। সে দিকে নজর না-দিয়ে এই দায় ঠেলাঠেলি ডেঙ্গি পরিস্থিতিকে আরও সঙ্গিন করবে বলেই আশঙ্কা চিকিৎসকদের অনেকের। তাঁদের আরও বক্তব্য, প্রশাসনের উপর মহল থেকে এই ধরনের হুঁশিয়ারি হাসপাতালগুলিকে প্রকৃত সত্য প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখবে। যার ফল আরও মারাত্মক হতে পারে।

অহর্ষির দিদিমা সীমা কর্মকার জানান, গত রবিবার নাতির জন্মদিন ছিল। তার পর বুধবার রাত থেকে প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হয় সে। বৃহস্পতিবার কলকাতার ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্‌থে তাকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শুক্রবার জ্বর কিছুটা কমলেও প্লেটলেট আড়াই লাখ থেকে দেড় লাখে নেমে যায়। শরীরে যন্ত্রণাও শুরু হয়। শনিবার থেকে হাতে-পায়ে, পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। প্লেটলেট এক ধাক্কায় নেমে দাঁড়ায় ২৪ হাজারে। প্লেটলেট দিয়েও কাজ হয়নি। রবিবার সকাল থেকে শরীর ফুলতে থাকে। সে দিনই রাত ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় অহর্ষির। অহর্ষির মৃত্যুর পরে তার চোখ দু’টি দান করার সিদ্ধান্ত নেন বাবা শুভজিৎ ধর এবং মা স্মিতাদেবী।

দক্ষিণ দমদম পুরসভা অভিজাত এলাকায় সচেতনতার অভাবের দাবি করলেও এ দিন অহর্ষিদের ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, জানলায় জাল লাগানো রয়েছে। ঘরের ভিতরে যাতে কোথাও জল জমে না-থাকে, সে বিষয়ে ওই পরিবারের সদস্য ও তাঁদের প্রতিবেশীরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তাঁদের অনেকেই পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁরা জানান, মশা নিয়ন্ত্রণের কাজকর্ম নিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

অতীনবাবুর সঙ্গে কী কথা হয়েছে জানতে সোমবার সন্ধ্যায় অহর্ষির অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কেউই কথা বলতে চাননি।

Health Death Dengue Lake Town
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy