ফাইল চিত্র।
পণ্য সরবরাহের আড়ালে মাদক পাচার করা হচ্ছে সন্দেহে একটি ট্রাককে আটক করেছিলেন তদন্তকারীরা। আরোহীরা ট্রাক থেকে নেমে তদন্তকারীদের দেখিয়ে দেন যে, ট্রাকের পিছনে জিনিস রাখার জায়গা পুরো ফাঁকা। কিন্তু সেই ফাঁকা ট্রাকে তল্লাশি চালাতে গিয়েই তদন্তকারীরা দেখেন, জিনিস রাখার জায়গায় পৃথক লোহার চেম্বার রয়েছে। আর তা খুলতেই দেখা যায়, সেই লোহার চেম্বার ঠাসা রয়েছে প্লাস্টিকের ব্যাগ ভর্তি গাঁজায়। শুক্রবার গভীর রাতে উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল থানা এলাকার শ্যামনগর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে এই অভিযান চলে।
সিআইডি সূত্রের খবর, গোপন চেম্বার থেকে ৩০১ কেজি গাঁজা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৩০ লক্ষ টাকা। মাদক পাচারের অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম করুণাকারা বাগ, সঞ্জিত বিশ্বাস, সন্তোষ সিংহ এবং আকাশ সাঁতরা। করুণার বাড়ি ওড়িশার তিতলাগড়ে। সে ওই মাদক চক্রের মাথা বলে দাবি তদন্তকারীদের। আকাশের বাড়ি কল্যাণী সীমান্তে। অন্য দুই ধৃতের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনায়।
তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তেরা ওড়িশা থেকে ওই মাদক নিয়ে এসেছিল। নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল বনগাঁ, জগদ্দল এবং কল্যাণীতে। সেখানে গাঁজা বিক্রির স্থানীয় দালাল রয়েছে। তাদের হাতেই তুলে দেওয়ার জন্য ওই মাদক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে দাবি। কাদের কাছে তারা মাদক সরবরাহ করত, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে বলে তদন্তকারী এক অফিসার জানান। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, ওই চক্রটি উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ায় জাল বিছিয়ে রেখেছে। গত কয়েক মাস ধরে ওড়িশা থেকে গাঁজা গাড়িতে এনে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
কোন পথে গাঁজা জেলায় ঢুকছে, তা জানতে তদন্ত শুরু করেন সিআইডি-র মাদকদমন শাখার আধিকারিকেরা। তাতেই জানা যায়, ট্রাকে করে ওই মাদক নিয়ে আসা হচ্ছে রাজ্যে। সেই মতো কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে তল্লাশি শুরু করেন তাঁরা। তাতেই ধরা পড়ে যায় চার জন।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, গাড়ির পিছনে লোহার গোপন চেম্বার তৈরি করে তার ভিতরে রাখা হয়েছিল মাদকে ঠাসা প্যাকেট। গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিতে মাঝপথে গাড়ির নম্বরও বদল করে নেওয়া হত। এ ক্ষেত্রেও ওড়িশা থেকে গাঁজা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সীমানা ছুঁতেই গাড়ির নম্বর বদল করে দিয়েছিল পাচারকারীরা। ওই গাড়ি থেকেই তিনটি রাজ্যের ভুয়ো নম্বর প্লেট উদ্ধার করা হয়েছে। চক্রের পিছনে আরও বড় মাথা রয়েছে বলে অনুমান তদন্তকরারীদের। ধৃতদের জেরা করে সেই সম্পর্কে জানার চেষ্টা চলছে বলে দাবি সিআইডি-র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy