শোক: টালিনালায় তলিয়ে গিয়ে ন’বছরের শুভমের মৃত্যুর পরে পরিজনদের হাহাকার। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
জোয়ারের জলে ডুবে গিয়ে মৃত্যু হল ন’বছরের এক বালকের। শুক্রবার দুপুরে, নিউ আলিপুর থানার অধীনে চেতলা রোডের ঘটনা। মৃত শিশুটির নাম শুভম পুরী।
পুলিশ জানায়, ৩ডি চেতলা রোডের বাসিন্দা শুভমের বাড়ি টালিগঞ্জ ফাঁড়ি সংলগ্ন মহাবীরতলার কাছে। তার বাড়ি টালিনালার উল্টো দিকে হওয়ায় জোয়ার এলে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে সে সাঁতার শিখতে যেত। পরিবারের দাবি, শোলার খণ্ড জড়িয়ে ধরে তারা নিজেরাই সাঁতার শিখত।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ জোয়ার এলে শুভম পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে টালিনালায় নামে। এ দিনও একটি শোলার খণ্ড জড়িয়ে ধরে সাঁতার কাটার চেষ্টা করছিল সে। বাকিরা তার পিছনে ছিল। শুভমই বাকিদের বলে তাকে একটু ঠেলে দিতে। আর সেই ঠেলাতেই শোলার খণ্ড তার হাত থেকে সরে যায় আর শুভম হাবুডুবু খেতে থাকে। শুভমের বন্ধুদের দাবি, তখন জোয়ারের জল উপচে পড়ছিল। ফলে সাঁতারে অপটু শুভম জলে পড়েই ডুবে যেতে থাকে। বাকিরা তার হাত ধরতে গেলেও পারেনি। জোয়ারের টানে তাদের চোখের সামনেই শুভম ভেসে যায়।
শুভমকে ভেসে যেতে দেখে বাকি তিন খুদে চিৎকার করে লোক জড়ো করে এবং বেশ কয়েক জন সঙ্গে সঙ্গে জলে ঝাঁপ দিয়ে শুভমকে খোঁজার চেষ্টাও করেন। কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর পরেই খবর যায় নিউ আলিপুর থানা ও কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কাছে। প্রায় তিন ঘণ্টা পরে জোয়ারের জল নেমে গেলে ঘটনাস্থল থেকে ডুবুরিরা শুভমকে উদ্ধার করেন। এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
এ দিন শুভমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার ঠাকুমা ছোট নাতির মৃত্যুর খবর পেয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। মৃতের পরিজনেরা জানান, শুভমের মা দু’বছর আগে মারা যান। তার পর থেকে দুই নাতিকে ঠাকুমাই আগলে রাখেন। শুভমের বাবা ধনঞ্জয় পুরী গাড়ি চালান। ঘটনার সময়ে তিনি এ দিন বাড়িতে ছিলেন না। শুভমের দাদা একাদশ শ্রেণির ছাত্র। খবর পেয়ে সে-ও ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ভাইকে উদ্ধার করতে। কিন্তু সব চেষ্টাই বিফলে গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শুভমের দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তবে তার পরিবার থেকে কোনও রকম অভিযোগ দায়ের হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy