E-Paper

গঙ্গার পলি তোলা হয় গবেষণা সংস্থার পরামর্শে, আদালতকে জানাল বন্দর

গঙ্গা থেকে পলি তুলে গঙ্গার বুকেই তা ফেলা নিয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অগভীর জায়গা থেকে পলি তুলে স্রোতের গতিবিধি বুঝে গভীর অংশে ফেলা হয়। কাজটি বিশেষজ্ঞদের তদারকিতে করা হয়ে থাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ ০৭:২৩
An image of Ganga

নাব্যতা কমার পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিত ভাবে গঙ্গার পাড়ের মাটির ক্ষয় হচ্ছে। ফাইল চিত্র।

অবৈজ্ঞানিক ভাবে এবং নির্দিষ্ট পরিসরে গঙ্গার পলি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। সেই পলি ও মাটি আবার গঙ্গাতেই ফেলা হচ্ছে। তাই নাব্যতা কমার পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিত ভাবে গঙ্গার পাড়ের মাটির ক্ষয় হচ্ছে। জাতীয় পরিবেশ আদালতের এক মামলায় এমনই অভিযোগ উঠেছিল শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের (কলকাতা বন্দর) বিরুদ্ধে। যার পরিপ্রেক্ষিতে হলফনামা জমা দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে, বন্দরের বিশেষজ্ঞের তদারকিতে পলি নিষ্কাশনের কাজ করা হয়। এই কাজে আঞ্চলিক, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বন্দর, উপকূলবর্তী, সামুদ্রিক সংক্রান্ত বিষয়ে অভিজ্ঞ, গবেষণাকারী সংস্থা ‘ন্যাশনাল টেকনোলজি সেন্টার ফর পোর্টস ওয়াটারওয়েজ় অ্যান্ড কোস্টস’ (এনটিসিপিডব্লিউসি)-কে পরামর্শদাতা নিয়োগ করা হয়েছে।

শুধু তা-ই নয়, পলি নিষ্কাশনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের বিধি মেনে করা হয়। ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি করে মন্ত্রক জানিয়েছিল, এই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার পরিবেশগত ছাড়পত্র দরকার। তাই পলি নিষ্কাশন এই ছাড়পত্রের অনুমোদনের ভিত্তিতেই হয়ে থাকে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, অনিয়ন্ত্রিত ভাবে পলি নিষ্কাশনের জন্য বটানিক্যাল গার্ডেনের এক প্রান্তের মাটি ক্ষয়ে গিয়ে বড় বড় গাছ উপড়ে যাচ্ছে বলে গত জানুয়ারিতে মামলা হয়েছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবস্থান জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

সেই নির্দেশ মতোই বন্দরের তরফে জবাব দেওয়া হয়েছে। জবাবে আরও কয়েকটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন কর্তৃপক্ষ। যেমন, বটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন তীরবর্তী এলাকায় পলি জমে ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়েছে বলে মামলার আবেদনে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, গত ২০ বছরে সংশ্লিষ্ট এলাকায়, অর্থাৎ উত্তর প্রান্তে শালিমার থেকে খিদিরপুর ডক এবং দক্ষিণ প্রান্তে পাঁচপাড়া থেকে মেটিয়াবুরুজ, এই অংশে নাব্যতা হ্রাসের প্রমাণ মেলেনি। বরং জলধারণের ক্ষমতা প্রায় একই রয়েছে। বন্দরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘পলি নিষ্কাশন ইচ্ছেমতো হয় না। তথ্য সংগ্রহ করে বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে হয়। পলি নিষ্কাশনের জন্য বটানিক্যাল গার্ডেনের মাটির ক্ষয় হচ্ছে, এই দাবির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।’’

গঙ্গা থেকে পলি তুলে গঙ্গার বুকেই তা ফেলা নিয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অগভীর জায়গা থেকে পলি তুলে স্রোতের গতিবিধি বুঝে গভীর অংশে ফেলা হয়। কাজটি বিশেষজ্ঞদের তদারকিতে করা হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট পরিসরে পলি নিষ্কাশন হয়, এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বহু দিন আগে থেকেই জাহাজ চলাচলের সুবিধার জন্য নির্দিষ্ট জায়গার পলিই তোলা হয়। কারণ, সমগ্র গঙ্গার পলি নিষ্কাশনের জন্য যে অর্থ ও লোকবল দরকার, তার আয়োজন করা অসম্ভব। সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত অবশ্য পাল্টা বলছেন, ‘‘গঙ্গা থেকে পলি তুলে যে তা গঙ্গাতেই ফেলা হয়, সেটা কিন্তু কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নিয়েছেন। সে যতই তাঁরা মামলার বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করুন না কেন!’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ganga National Green Tribunal Silt

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy