Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
University of Calcutta

অসুস্থ ছাত্রীর উত্তরপত্র ফেরত, সংঘাত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে

আশুতোষ কলেজের মনস্তত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় সিমেস্টারের এক ছাত্রীর সিট পড়েছে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে। ওই কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার সোমবার জানান, ছাত্রীটির চিকেন পক্স ধরা পড়ে গত শুক্রবার।

An image of Calcutta University

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৪ ০৬:৩৪
Share: Save:

চিকেন পক্সে আক্রান্ত এক পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র ঘিরে চূড়ান্ত বিতর্ক বাধল সংশ্লিষ্ট কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে।

আশুতোষ কলেজের মনস্তত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় সিমেস্টারের এক ছাত্রীর সিট পড়েছে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে। ওই কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার সোমবার জানান, ছাত্রীটির চিকেন পক্স ধরা পড়ে গত শুক্রবার। সে দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামককে মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানানো হয়। তাঁর পরামর্শ মতো ছাত্রীটির বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ঠিক হয়, সেই উত্তরপত্র জীবাণুমুক্ত করে আলাদা খামে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হবে। ছাত্রীটিকেও এমন কালি ব্যবহার করতে বারণ করা হয়, যা ধুয়েমুছে যেতে পারে। কিন্তু শিউলি জানান, ওই উত্তরপত্র নিতে অস্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর।

এই নিয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-র বক্তব্যে বিতর্ক আরও বেড়েছে। তিনি জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টিতে পদ্ধতিগত ত্রুটি হয়েছে। শান্তার বক্তব্য, ওই পরীক্ষার্থী যে চিকেন পক্সে আক্রান্ত, তা শুক্রবার রাতে মৌখিক ভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিয়ামককে জানালে তিনি ঠিক পদ্ধতিতে আবেদন করতে বলেন। জানিয়ে দেন, এর পরে ছাত্রীটির পরীক্ষার দায়িত্ব নেবে বিশ্ববিদ্যালয়ই। কিন্তু লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়নি।

অন্তর্বর্তী উপাচার্যের আরও দাবি, শনিবার হাসপাতাল থেকে ছাত্রীটি যখন পরীক্ষা দিচ্ছেন, তখন একেবারে শেষ লগ্নে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরে বিষয়টি জানান। এর পরে নিয়ম অনুযায়ী, জীবাণুমুক্ত অবস্থায় ছাত্রীটির উত্তরপত্র আলাদা করে আসার কথা ছিল। কিন্তু সেটি অন্য আরও ৪৭টি উত্তরপত্রের সঙ্গে একই প্যাকেটে আসে। যা দেখে পুরো প্যাকেট কলেজে ফেরত পাঠানো হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই উত্তরপত্রটি আপাতত পুলিশি হেফাজতে রাখতে হবে। এর পরে বাকি ৪৭টি উত্তরপত্র কলেজ পাঠালে তা গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়।

শান্তা বলেন, ‘‘খাতাটি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। তবে, সোমবার ওই ছাত্রীর অভিভাবক প্রয়োজনীয় ফর্ম পূরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিয়েছেন। তাই মেয়েটির পরবর্তী পরীক্ষা নিয়ে কোনও সমস্যা থাকবে না।’’ প্রসঙ্গত, ওই ছাত্রীর আজ, মঙ্গলবার পরীক্ষা রয়েছে। হাসপাতাল থেকেই তাঁর পরীক্ষা দেওয়ার কথা।

তবে, শনিবার শেষ মুহূর্তে ওই ছাত্রীর বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে জানানোর যে প্রসঙ্গ তুলেছেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য, তা মানতে চাননি শিউলি। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, শুক্রবার রাতেই পরীক্ষা নিয়ামক জয়ন্ত সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর পরামর্শ মতো হাসপাতালে মেয়েটির পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। শিউলি আরও জানান, ছাত্রীটির উত্তরপত্র জীবাণুমুক্ত অবস্থায় আলাদা খামেই পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর বলে, খাতাটি জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, উত্তরপত্রটি যথাযথ ভাবেই জীবাণুমুক্ত করা হয়েছিল। সোমবারেও লিখিত অনুরোধ জানিয়ে মেয়েটির উত্তরপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে দফতরে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, তা নেওয়া হয়নি।

শিউলি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, কেন উত্তরপত্রটি থানায় রাখা হয়নি? থানা জানিয়েছে, ওই উত্তরপত্র কলেজ দিলে তারা নেবে না। দেওয়ার কথা পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরের। শিউলির দাবি, ‘‘এত পড়ুয়া বিদ্বেষী শিক্ষা প্রশাসক আগে কখনও দেখিনি।’’ আপাতত উত্তরপত্রটি খামবন্দি অবস্থায় লেডি ব্রেবোর্ন কলেজেই রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE