—প্রতীকী চিত্র।
ফের এক কিশোরীর উপরে হামলা হল।
বেলঘরিয়ার প্রফুল্লনগর এলাকায় বুধবার বিকেলে এক ছাত্রীর উপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় এক কিশোর। পরের পর কোপে সে রক্তাক্ত করে দেয় ছাত্রীটিকে। রাতেই হাসপাতালে ওই ছাত্রীর শরীরে একাধিক অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। ছাত্রীকে কোপানোর অভিযোগে কিশোরকে ধরে রেখে বেধড়ক পেটান স্থানীয় লোকজন। জখম অবস্থায় তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, ছাত্রীটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়ে ওই কিশোর হামলা চালিয়েছে। যদিও পরিবারের দাবি, মেয়েটির সঙ্গে অন্য এক কিশোরের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের আপত্তির কারণে ছাত্রীটি সেই সম্পর্ক থেকে পিছিয়ে আসে। ছাত্রীর পরিবারের অনুমান, ওই কিশোরই এ দিনের
হামলাকারী কিশোরকে কাজে লাগিয়েছিল। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয়েরা জানান, এ দিন মায়ের সঙ্গে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল কিশোরী। বাড়ির অদূরেই হামলাকারী কিশোর কাটারি নিয়ে তার উপরে চড়াও হয়। প্রকাশ্যেই কিশোরীর মাথা, ঘাড়-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপ মারে সে। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে তার মা-সহ স্থানীয় দু’জন কাটারির কোপে জখম হন। এর পরেই লোকজন ওই কিশোরকে ধরে বেধড়ক মারধর করেন।
এই ঘটনা ঘিরে বুধবার দুপুরে উত্তেজনা ছড়ায় প্রফুল্লনগর এলাকায়। স্থানীয়েরা হামলাকারী কিশোরকে গণপিটুনি দেওয়ার সময়েই বেলঘরিয়া থানার পুলিশ পৌঁছে তাকে কোনও মতে উদ্ধার করে। এই হামলার ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়েরা বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেন। এমনকি, শাসকদলের এক নেতা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান লোকজন।
ওই কিশোরী দমদমের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। কাটারির আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে মায়ের সামনে তাকে রাস্তার উপরে বসে পড়তে দেখা যায়। তাকে উদ্ধার করে সঙ্কটজনক অবস্থায় ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ।
ছাত্রীটির পরিবার জানিয়েছে, সে প্রতিদিনের মতোই এ দিন মায়ের সঙ্গে স্কুল থেকে ফিরছিল। প্রফুল্লনগরের কাছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ভূগর্ভ-পথ পেরিয়ে ফেরার সময়েই তার উপরে হামলা চালায় ওই কিশোর। পুলিশের ধারণা, আগে থেকেই কিশোরটি কাটারি নিয়ে লুকিয়েছিল। ফাঁকা রাস্তায় আচমকা সে পিছন থেকে কাটারি নিয়ে কিশোরীর উপরে চড়াও হয়ে তাকে এলোপাথাড়ি কোপ মারতে শুরু করে। কাটারির কোপ পড়ে কিশোরীর মাথায়, ঘাড়ে, পিঠে ও হাতের আঙুলে। রক্তাক্ত অবস্থায় সে রাস্তায় বসে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছেলেটি সেই সময়ে অত্যন্ত বেপরোয়া হয়ে কারও কথা শুনতে চায়নি। ছাত্রীর মা ছাড়াও যে ক’জন তাকে ঠেকাতে গিয়েছেন, প্রত্যেকেই জখম হয়েছেন। ই এম বাইপাসের ওই বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রের খবর, ভর্তির পরেই কিশোরীর শরীরে অস্ত্রোপচার হয়। রাতে তার অবস্থা খানিকটা স্থিতিশীল হয়েছে।
কিশোরীর পরিবার জানায়, ডানলপের বাসিন্দা এক কিশোরের সঙ্গে তাদের মেয়ের সম্পর্ক ছিল। মেয়েকে বুঝিয়ে সেই সম্পর্ক থেকে বার করে আনা হয়। ছেলেটির ফোন নম্বরও ব্লক করে দেওয়া হয়। পরিবারের দাবি, ওই ছেলেটির বন্ধুই এ দিনের হামলাকারী। বিষয়টি ছাত্রীর পরিবার পুলিশকেও জানিয়েছে।
ব্যারাকপুরের নগরপাল অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি। ঠিক কি কারণে হামলা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy