Advertisement
E-Paper

গ্যারাজের মধ্যে পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, চৌহদ্দিতে মশার ভরা সংসার

পুরসভার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ঠিকানা ২১, রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেন। হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে যাওয়ার আগে ফোরশোর রোডের যে বস্তিতে আচমকা ঢুকে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ঠিক তার পাশে।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০২
অ-স্বাস্থ্য: স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে আবর্জনা তোলার ভাঙা গাড়ি। সেখানেই জন্মেছে মশার লার্ভা। বুধবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

অ-স্বাস্থ্য: স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে আবর্জনা তোলার ভাঙা গাড়ি। সেখানেই জন্মেছে মশার লার্ভা। বুধবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

চার দিকে পড়ে আছে পুরসভার আবর্জনা তোলার অজস্র ভাঙাচোরা গাড়ি। এক-একটা গাড়ির মধ্যে জমে রয়েছে দীর্ঘদিন সাফ না-হওয়া আবর্জনা। তার উপরে পড়ে আছে প্লাস্টিকের গ্লাস থেকে শুরু করে জল ভরা থার্মোকলের বাটি। সেখানেই কিলবিল করছে মশার লার্ভা। একই অবস্থা বছরখানেক আগে উদ্বোধনের পরের দিনই বন্ধ হয়ে যাওয়া কুকুরের নির্বীজকরণ কেন্দ্রের। ভাঙাচোরা সেই ঘরে থাকা অর্ধেক জল ভর্তি বালতিতেও জন্ম নিয়েছে অজস্র লার্ভা। আর এ সবের মধ্যে চলছে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র! যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসূতি থেকে সদ্য মা হওয়া মহিলারাও শিশুদের নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসেন।

পুরসভার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ঠিকানা ২১, রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেন। হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে যাওয়ার আগে ফোরশোর রোডের যে বস্তিতে আচমকা ঢুকে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ঠিক তার পাশে। পুরোদস্তুর একটি গ্যারাজের ভিতরে। ওই কেন্দ্রই বতর্মানে হয়ে দাঁড়িয়েছে মশার অন্যতম প্রজনন কেন্দ্র। মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ গ্যারাজের ভিতরে বসবাস করা পুরকর্মীদের ১৫টি পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, মাসে এক বার স্বাস্থ্য দফতরের লোকজন এসে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চার পাশে স্প্রে করে চলে যান। কিন্তু ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশেই যে পুরকর্মীরা থাকেন, সেটা তাঁদের চোখে পড়ে না।

জয়সানা কুমারী নামে গ্যারাজের বাসিন্দা এক মহিলা বলেন, ‘‘মশার কামড়ে টিকতে পারি না। সারাক্ষণ কি মশারির মধ্যে থাকা যায়? এখনও কারও ডেঙ্গি হয়নি ঠিকই। কিন্তু হতে কতক্ষণ?’’

পুরসভার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চার পাশে পড়ে রয়েছে মরচে ধরে যাওয়া আবর্জনা ফেলার হাতগাড়ি, পুরসভার পানীয় জল সরবরাহের বিকল গাড়ি-সহ একাধিক বড় গাড়ি। রয়েছে একটি কম্প্যাক্টর স্টেশনও! যেখানে সারা দিন আবর্জনা এনে মেশিনের মধ্যে ফেলে মণ্ড তৈরি করা হয়। অন্য দিকে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির বিরাট চত্বরে রয়েছে একটি ভাঙাচোরা পাম্পিং স্টেশন এবং ভগ্নপ্রায় ওভারহেড ট্যাঙ্ক। ঠিক তার পাশেই পুরসভার কর্মীদের বস্তি।

ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে বিজয় আচার্য নাম এক যুবক বলেন, ‘‘এমন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কী ভাবে ভাঙাচোরা গাড়ি রাখার গ্যারাজ তৈরি হল জানি না। বিশেষত তারই মধ্যে কী ভাবে আবার স্বাস্থ্যকেন্দ্র হল, সেই ব্যাখ্যা আজও পাইনি।’’

ওই জায়গায় অস্থায়ী ঘর বানিয়ে থাকা লোকজনের প্রশ্ন, হাওড়া পুরসভা সমস্ত জায়গায় সাফাই অভিযান চালালেও এই জায়গাটি তাদের নজর এড়িয়ে যায় কী ভাবে? এ ব্যাপারে হাওড়ার পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির আশপাশে কেন এমন অবস্থা, খোঁজ নিয়ে দেখছি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসারের কাছে এর কারণ জানতে চাইব।’’

Howrah Health Centre Foreshore Road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy