E-Paper

নারায়ণপুরে সস্ত্রীক ওষুধ ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত পাওনাদার

গত শনিবার সাগর মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যবসায়ী ও তাঁর স্ত্রী রূপার দেহ উদ্ধার করেছিল নারায়ণপুর থানার পুলিশ। গলায় ক্ষুরের আঘাতে জখম তাঁদের নাবালিকা মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:০৫
An image of Arrest

—প্রতীকী চিত্র।

ধারের টাকা ফেরত চেয়ে দেওয়া হয়েছিল গ্রেফতারির হুমকি। ঘটনাচক্রে তার কিছু দিনের মধ্যেই নারায়ণপুরের বাসিন্দা ওষুধ ব্যবসায়ী সপরিবারে মৃত্যুবরণের সিদ্ধান্ত নেন। সেই ঘটনায় ব্যবসায়ীকে হুমকি ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অমিত শিকদার নামে এক ব্যক্তিকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করল নারায়ণপুর থানার পুলিশ।

গত শনিবার সাগর মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যবসায়ী ও তাঁর স্ত্রী রূপার দেহ উদ্ধার করেছিল নারায়ণপুর থানার পুলিশ। গলায় ক্ষুরের আঘাতে জখম তাঁদের নাবালিকা মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, অমিত ওষুধের পাইকারি ব্যবসায়ী। সাগরকে তিনি চার লক্ষ টাকারও বেশি ধার দিয়েছিলেন। সাগর সেই টাকা শোধ দিতে পারছিলেন না বলে অমিত পুলিশকে জানিয়েছেন। তিনি যে সাগরকে টাকা উদ্ধারের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন, পুলিশে ধরিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন, তা অমিত পুলিশি জেরায় স্বীকার করেছেন বলেই দাবি তদন্তকারীদের।

গত শুক্রবার রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে প্রথমে সাগরেরা সপরিবারে ঘুমের ওষুধ খান বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। স্ত্রী ও মেয়ের মৃত্যু নিশ্চিত করতে সাগর তাঁদের গলা ক্ষুর দিয়ে কেটে দেন। তার পরে নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন। কিন্তু ঘুমের ওষুধ তাঁদের মেয়ের শরীরে কাজ করেনি। গলায় আঘাত নিয়েই মেয়ে শনিবার বেলার দিকে সাগরের এক কর্মচারীকে মেসেজ করে বাড়িতে ডেকে পাঠায়। সেই কর্মচারী সাগরদের ফ্ল্যাটে পৌঁছনোর পরেই ঘটনা সামনে এলে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে যায়।

সাগরের মেয়ের শারীরিক পরিস্থিতি আপাতত স্থিতিশীল হলেও তার গলার স্বর স্পষ্ট হচ্ছে না। পুলিশ জানায়, ঠোঁটের নড়াচড়া দেখে তার কথা বুঝতে হচ্ছে। যদিও সাগরের মেয়েই অমিতের নাম নার্সিংহোমের শয্যায় শুয়ে চিকিৎসকেদের জানিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। আপাতত মাসখানেক মেয়েটিকে সেখানেই ভর্তি রেখে চিকিৎসা করা হবে।

পুলিশ জানায়, ধৃত অমিত শিকদার নারায়ণপুরের বাসিন্দা। তবে দমদমেও তাঁর বাড়ি রয়েছে। সাগরের মৃত্যুর পরে তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার রাতে সূত্র মারফত খবর পেয়ে অমিতকে নারায়ণপুর এলাকা থেকেই গ্রেফতার করা হয়। তিনি সাগরকে কত টাকা, কী ভাবে দিয়েছিলেন, সেই তথ্য অমিতকে হেফাজতে নিয়ে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অমিত একাধিক বার সাগরকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

যদিও পুলিশের অনুমান, অমিতের মতো অনেকেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সাগরকে চাপ দিয়েছেন। কারণ, তাঁর মেয়ের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে কোভিডের পরেই সাগরের ব্যবসার পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়ে যায়। ওষুধের দোকান চালাতে গিয়ে তিনি দেনা করেন। আবার সাগর অন্যের দেনার গ্যারান্টারও ছিলেন। তাঁরাও টাকা না দেওয়ায় সাগরের উপরে সেই দেনার চাপও ছিল। সব মিলিয়ে বাজারে তাঁর প্রচুর ধার হয়ে গিয়েছিল। সাগর নারায়ণপুর থানার উল্টো দিকের বাড়ি বিক্রি করে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। সেটিও তিনি বিক্রি করে দেনা শোধের চেষ্টা করছিলেন। তাঁর বাজারে কত দেনা রয়েছে, সেই খোঁজও নেওয়া হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানান।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

arrest unnatural death police investigation Debts Narayanpur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy