E-Paper

তথ্যপ্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস বধূহত্যায় অভিযুক্ত

২০১৯ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা, শিখা সাউ নামে ওই গৃহবধূ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ০৯:০০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

বধূহত্যার মামলায় প্রায় ছ’বছর জেল হেফাজতে থাকা, অভিযুক্ত স্বামীকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিলেন আলিপুর আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। শনিবার ওই মামলায় আদালতগ্রাহ্য তথ্যপ্রমাণের অভাবে অভিযুক্ত তাপস সাউকে বিচারক মামলা থেকে মুক্তি দেন বলে আদালত সূত্রের খবর। এই ঘটনায় তদন্তকারী অফিসারের কর্মপদ্ধতি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে বলেও সূত্রের খবর।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা, শিখা সাউ নামে ওই গৃহবধূ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কয়েক দিন চিকিৎসার পরে তাঁর মৃত্যু হয়। শিখাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে বলে তাঁর স্বামী তাপস সাউয়ের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ওই গৃহবধূর পরিজনেরা। অভিযোগের ভিত্তিতে তাপসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আদালত সূত্রের খবর, মামলার তদন্তকারী অফিসার চার্জশিট জমা দেন। ওই গৃহবধূর মৃত্যুকালীন জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে বলেও আদালতে নথি পেশ করেন তিনি। পাশাপাশি, ওই ঘটনায় ১২ জন সাক্ষী রয়েছেন বলে আদালতে নথি পেশ করা হয় পুলিশের তরফে।

অভিযুক্তের আইনজীবী মোহিত সরকার বলেন, ‘‘ওই গৃহবধূর মৃত্যুকালীন জবানবন্দি ঠিক ভাবে গ্রহণ করা হয়নি। ওই জবানবন্দির নথিতে হাসপাতালের চিকিৎসক ও এক জন নার্সের সই রয়েছে। কিন্তু ওই গৃহবধূর চিকিৎসা যাঁরা করেছিলেন, তাঁরা সকলেই জানিয়েছেন, রোগীর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। তিনি কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। তা হলে তাঁর মৃত্যুকালীন জবানবন্দি কী ভাবে গ্রহণ করা হল? আদালতের কাছে সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। এর পরে সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে আদালত তদন্তকারী অফিসারের পেশ করা মৃত্যুকালীন জবানবন্দি গ্রহণ করেনি।’’

এ ছাড়াও, মামলার তদন্তকারী অফিসার দুই ব্যক্তিকে একাধিক বার সাক্ষী হিসেবে পেশ করেছেন বলে আদালত সূত্রের খবর। আদালত সূত্রের খবর, বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে প্রায় আট বার তদন্তকারী অফিসারকে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি গরহাজির ছিলেন। এর পরে আদালতের তরফে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তা এবং বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়। তার পরে আদালতে হাজির হন মামলার তদন্তকারী অফিসার। কিন্তু কাঠগড়ায় ওঠার পরেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান তিনি। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মামলায় তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করা যায়নি। অভিযুক্তের আইনজীবী মোহিত সরকার বলেন, ‘‘কোনও ভাবেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে পারেনি পুলিশ।’’

রবিবার তাঁর আইনজীবীর অফিসে বসে তাপস দাবি করেন, ‘‘আমি ভেড়িতে কাজ করতাম। ওই রাতে বাড়ি ছিলাম না। ঘটনার খবর পেয়ে বাড়িতে আসি। স্ত্রীর গায়ে কী ভাবে আগুন লেগেছিল, আজও আমি জানি না। ঘটনার পরে শ্বশুরবাড়িতে খবর দিয়েছিলাম। আমিই হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Alipore Court Canning

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy