Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Dengue

আবর্জনায় ভরেছে জলাশয়, মশার আঁতুড়ঘর এলাকাই

দশম শ্রেণির ছাত্রটি তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। সপ্তমীতে ঠাকুর দেখতেও বেরিয়েছিল সে। এলাকার মশার কামড়ে, না কি বাইরে থেকে মশার কামড়ে সায়ন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিল, তা প্রমাণ করা অসম্ভব।

অবরুদ্ধ: দক্ষিণ দমদমের আমবাগান এলাকার একটি পুকুরে ভাসছে শেওলা ও আবর্জনা। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

অবরুদ্ধ: দক্ষিণ দমদমের আমবাগান এলাকার একটি পুকুরে ভাসছে শেওলা ও আবর্জনা। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪৬
Share: Save:

বাড়িটির অদূরে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জলাশয়ে জমে শেওলা, ভাসছে পলিব্যাগে মোড়ানো বাসি ফুল, থার্মোকল, কাগজের ব্যাগ, চায়ের কাপ-সহ অনেক কিছু। এখানেই শেষ নয়। কাছেই একটি ড্রামে জমানো রয়েছে জলও! সচেতনতার এমনই ছবি দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলা এলাকার। বৃহস্পতিবার রাতে ওই এলাকার উল্লিখিত বাড়িটির বাসিন্দা এক কিশোরের আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে। মৃত কিশোরের নাম সায়ন হালদার (১৬)।

দশম শ্রেণির ছাত্রটি তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। সপ্তমীতে ঠাকুর দেখতেও বেরিয়েছিল সে। এলাকার মশার কামড়ে, না কি বাইরে থেকে মশার কামড়ে সায়ন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিল, তা প্রমাণ করা অসম্ভব। তবে তার বাড়ির আশপাশে সচেতনতার অভাব যে কতটা, সেটা এলাকা ঘুরে ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। পুজোর আগেও সপ্তাহব্যাপী অভিযানে অভিজাত আবাসন এলাকার একাংশ থেকে বিপুল পরিমাণে লার্ভা পেয়েছিলেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। পর্যাপ্ত সচেতনতা যে নেই সে কথা মেনে নিচ্ছেন পুর এলাকার বাসিন্দারা এবং পুর কর্তৃপক্ষ।

যার ফলে পুর এলাকায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০ ব্যক্তি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে ৩৫ জন অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর। দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ফাঁকা জমি কিংবা পুকুর পরিষ্কার করছেন না মালিকেরাই। পুরসভার তরফে নোটিস পাঠালেও মেলে না সাড়া। বিশেষ দল গড়ে জলাশয় ও ফাঁকা জমি পরিষ্কার করতে হচ্ছে পুরসভাকেই। এমনটাই দাবি কর্তৃপক্ষের।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশ জন সচেতনতার অভাবের বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। দমদমের বাসিন্দা কমল রায়ের মতে, ‘‘এমন মৃত্যুর ঘটনা রুখতে জনমত গঠন করে নাগরিকেরা দায়িত্ববান না হলে সমাধান হবে না।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর সুরজিৎ রায়চৌধুরী জানান, ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ফাঁকা জমি এবং পুকুরের ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ করতে পুরসভার কাছে আবেদন করা হবে। তবে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা, প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে করণীয় পদক্ষেপের বিষয়ে সচেতনতার অভাব যে আছে, মানছে সব পক্ষ।

দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস জানান, সচেতনতার অভাব রয়েছে। কী ভাবে সেই ফাঁক পূরণ করা যায়, চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ফাঁকা জমি এবং জলাশয়েরপরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ করা সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনায় বসবে পুরসভা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Environment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE