Advertisement
০১ মে ২০২৪
Minor Death

প্রার্থনার লাইনে অসুস্থ,পরে মৃত্যু তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর

অত্রিকার মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। স্কুলের কর্তৃপক্ষের তরফে জন এ কে ঘোষ বলেন, ‘‘তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রী অসুস্থ ছিল বলেই শুনেছি। তবে তার অসুস্থতা ঠিক কী, তা বলতে পারব না।”

An image of Death

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:৩৬
Share: Save:

স্কুল তখনও শুরু হয়নি। সাতসকালে স্কুলে আসা পড়ুয়াদের হুটোপুটি থামিয়ে তাদের সার দিয়ে দাঁড় করাতে ব্যস্ত শিক্ষকেরা। প্রার্থনা শুরু হবে, থিতিয়ে এসেছে হট্টগোল। লাইন করে দাঁড়ানো সেই ছাত্রীদের ভিড়ে আচমকাই হাঁটু মুড়ে বসে পড়ে বছর আটেকের এক ছাত্রী। শুরু হয় খিঁচুনি। প্রার্থনার মাঝপথেই অত্রিকা সেন নামে তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীকে নিয়ে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ছোটেন শিক্ষকেরা। খিদিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসাও শুরু হয়। তবে কিছু ক্ষণের মধ্যেই অত্রিকার মৃত্যু হয়।

সোমবার সকালে ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকার সেন্ট টমাস স্কুলে ওই মর্মান্তিক ঘটনার পরেই স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। তবে অত্রিকার মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। স্কুলের কর্তৃপক্ষের তরফে জন এ কে ঘোষ বলেন, ‘‘তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রী অসুস্থ ছিল বলেই শুনেছি। তবে তার অসুস্থতা ঠিক কী, তা বলতে পারব না। অত্রিকার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, চিকিৎসাও চলছিল তার। এ দিন স্কুলে আসার আগে মেয়েটি তার মা-বাবাকে জানিয়েছিল, শরীর ভাল লাগছে না। কিন্তু ক্লাসের কিছু প্রোজেক্ট জমা দেওয়ার জন্য অনিচ্ছা নিয়েই স্কুলে আসতে হয়েছিল তাকে।’’ তবে জনের কথায়, ‘‘আমি যত দূর শুনেছি, স্কুলের প্রার্থনার পরে ক্লাসে গিয়েই অসুস্থ হয়েছিল ওই ছাত্রী। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে চিকিৎসকদের কিছুই করার ছিল না বলে জানানো হয়েছে।’’

স্কুলের অধ্যক্ষা আর এলিয়াস বলেন, ‘‘স্কুলে আসার পরেই অসুস্থ বোধ করছিল ছাত্রীটি। প্রার্থনার সময়ে তার শরীর আরও খারাপ হয়। দরদর করে ঘামছিল মেয়েটি। শ্বাসকষ্টও হচ্ছিল। তখনই আমরা স্কুলের নার্সকে ডাকি। গাড়ির ব্যবস্থা করে তাকে পাঠানো হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু কিছুই করা গেল না!’’ আজ, মঙ্গলবার, সেন্ট টমাস স্কুল ছুটি ঘোষণা করেছে।

পরিবারের পক্ষ থেকেও এ দিন স্পষ্ট করে অত্রিকার অসুস্থতা সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। শোকস্তব্ধ পরিবারের তরফে অত্রিকার এক আত্মীয় বলেন, ‘‘ও অসুস্থ ছিল ঠিকই, তবে তার এমন পরিণতি হবে ভাবতেই পারিনি।’’ এ দিন রাত পর্যন্ত পুলিশের কাছেও কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি তার পরিবার।

ঠাকুরপুকুরের সাবর্ণপাড়ায় অত্রিকারা পুরনো বাসিন্দা। তাদের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, অসুস্থ হলেও মেয়েটির মুখে সারাক্ষণ হাসি লেগে থাকত। ছটফটে মেয়েটি পড়াশোনাতেও বেশ ভাল ছিল, জানিয়েছে তার সহপাঠীরাও।

এ দিন সকালের এই ঘটনা মনে পড়িয়ে দিয়েছে গত বছর জুন মাসে এলগিন রোডের একটি স্কুলের ঘটনার কথা। প্রার্থনার লাইনে দাঁড়িয়ে একই ভাবে ছটফট করে মারা গিয়েছিল এক ছাত্রী। জানা গিয়েছিল, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়াই ছিল তার মৃত্যুর কারণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE