E-Paper

এ বার র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে, লাভ হয়নি পুলিশে জানিয়েও

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল। সদ্য পাশ করা ওই ছাত্র বিষয়টি মাসকয়েক আগে পুলিশকেও জানিয়েছেন। তবে পুলিশ লঘু ধারা দিয়েছে বলে তাঁর দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ০৫:৫০
An image of Calcutta University

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ যখন জোরালো হচ্ছে, ঠিক তখনই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল। সদ্য পাশ করা ওই ছাত্র বিষয়টি মাসকয়েক আগে পুলিশকেও জানিয়েছেন। তবে পুলিশ লঘু ধারা দিয়েছে বলে তাঁর দাবি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছেও বার বার অভিযোগ করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। এ ছাড়া, বিষয়টি নাকি তিনি রাজ্য মানবাধিকার কমিশনেও জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি বিভাগের (বি-টেক) ওই পড়ুয়া এখনও থাকেন বালিগঞ্জের হস্টেলে (টেক হল)। ২০১৯ সালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তিনি র‌্যাগিংয়ের শিকার হন বলে অভিযোগ। ওই সময়ে ‘ইন্ট্রো’র নামে সিনিয়রেরা তাঁকে দিয়ে মদ আনাতেন এবং মদের গ্লাস ধোয়াতেন। তাঁকে মদ খাওয়ার জন্যও বলা হত বলে অভিযোগ।

করোনা-পর্বে দু’বছর ওই ছাত্র বাড়িতে ছিলেন। কিন্তু ফিরে আসার পরেও তিনি নানা ভাবে অত্যাচারের শিকার হয়েছেন বলে তাঁর দাবি। রাতে তাঁর দরজায় তালা দিয়ে দেওয়া, ঘরে প্রস্রাব করে রাখার মতো ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁর অভিযোগ। এমনকি, তাঁর ঘরে বোমা ছোড়া হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন ওই ছাত্র। তাঁর মেসের খাবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তিন মাস ধরে নিজেই রান্না করে খেয়েছিলেন বলে তিনি জানালেন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই এসএফআই উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চেয়েছে। এসএফআইয়ের অভিযোগ, টিএমসিপি নেতা অভিরূপ চক্রবর্তীর নেতৃত্বেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এসএফআইয়ের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক সম্পৃক্তা বসুর অভিযোগ, শুধু ওই হস্টেল নয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য হস্টেলেও আগে টিএমসিপি এমন কাণ্ড করেছে। তাঁর দাবি, সমস্ত হস্টেলেই বহিরাগত এবং প্রাক্তন ছাত্রেরা রয়েছে‌ন। তাঁদের বার করতে উদ্যোগী হোন কর্তৃপক্ষ।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং টিএমসিপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, সবটাই এসএফআইয়ের অপপ্রচার। প্রয়োজনে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হোক। ওই ছাত্রের মেসের খাবার বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে অভিরূপের বক্তব্য, ‘‘ওই ছাত্র খাবারের টাকা দিত না। মেস কমিটি তো নিজেদের তহবিল থেকে টাকা দিয়ে খাবার আনাতে পারে না।’’ রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস শুক্রবার জানালেন, অভিযোগ পেয়ে তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। তবে, ওই ছাত্রের বিরুদ্ধেও কিছু অভিযোগ তাঁদের কাছে এসেছে। তাঁরা সমস্ত অভিযোগই খতিয়ে দেখছেন। ছাত্রটির খাবার বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘আমরা এ বিষয়ে জানতে পেরেই খাবারের ব্যবস্থা করেছিলাম।’’ হস্টেলে বহিরাগত এবং প্রাক্তনদের থাকার বিষয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘বর্তমান ছাত্রেরা ছাড়া আর যাতে কেউ থাকতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে বার বারই উদ্যোগী হই আমরা। আবারও হব।’’

এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের বৈঠকে অস্থায়ী উপাচার্যের নেতৃত্বে ‘বোর্ড অব রেসিডেন্স কমিটি’ নতুন করে গঠন করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের বৈঠকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (কুটা) পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দিয়ে হস্টেলগুলির পরিস্থিতি বুঝতে এবং র‌্যাগিং আটকাতে সক্রিয় হওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta University harassment

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy