তিনি যা উত্তর লিখেছিলেন, তাতে প্রাপ্ত নম্বর হওয়া উচিত ছিল ৬৩৭। কিন্তু ফল প্রকাশের পরে নম্বর এসেছে ১২৮! ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের ফল বেরোতেই এমন অভিযোগ তুললেন, পাইকপাড়ার এক তরুণী। পরীক্ষার আয়োজক ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)-র বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন তিনি। পাশাপাশি, ‘এনটিএ’-কে আইনি নোটিসও পাঠিয়েছে ওই তরুণীর পরিবার।
শনিবার নিট-ইউজি-র ফল বেরিয়েছে। তাতে দেশে প্রথম ২০ জনের মধ্যে এ রাজ্যের দু’জন রয়েছেন। সেই তালিকায় না হলেও, দেশে প্রথম ২০০ ও রাজ্যে প্রথম ৫০ জনের মধ্যে তাঁর নাম থাকার কথা বলেই দাবি করছেন পাইকপাড়ার বাসিন্দা অনুষ্কা ভট্টাচার্য। তিনি জানাচ্ছেন, গত ৪ মে পরীক্ষার পরে দু’টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর নিয়ে অনেকেরই সংশয় ছিল। ওই তরুণী-সহ আরও কয়েক জন তখন ‘এনটিএ’-কে ইমেল করেন। এনটিএ-র তরফে ৩ জুন পরীক্ষার ওএমআর শিট এবং সম্ভাব্য একটি উত্তরপত্র (আনসার-কি) ইমেল করে সব পরীক্ষার্থীর কাছেই পাঠানো হয়। নিজের ওএমআর শিটের সঙ্গে সম্ভাব্য উত্তরপত্র মিলিয়ে দেখে ভাল ফলের আশাতেই ছিলেন অনুষ্কা।
অনুষ্কার মা সিঞ্চনা ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, শনিবার ফল প্রকাশের আগে সব পরীক্ষার্থীকে তাঁদের চূড়ান্ত উত্তরপত্র ইমেলে পাঠিয়ে দেয় এনটিএ। তারপরে ফল বেরোয়। সিঞ্চনা বলেন, “চূড়ান্ত উত্তরপত্রের সঙ্গে মেয়ের ওএমআর শিটের উত্তর মিলিয়ে দেখা হয়। তাতে পাওয়ার কথা ৬৩৭! কিন্তু দেখি মার্কশিটে এসেছে মোটে ১২৮।’ নিটের মার্কিং সিস্টেমে ১৮০টি প্রশ্নের প্রতিটির সঠিক উত্তরের জন্য ৪ নম্বর মেলে। ভুল উত্তর পিছু কাটা যায় এক নম্বর করে। অনুষ্কার দাবি, তিনি ১৭৩টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। তার মধ্যে ১৬২টির উত্তর সঠিক হয়েছে, অর্থাৎ প্রতিটি ৪ নম্বর করে মোট ৬৪৮। তবে ১১টি প্রশ্নের উত্তর ভুল হওয়ায় ১১ নম্বর বাদ গিয়েছে। প্রাপ্ত নম্বর দাঁড়াচ্ছে ৬৩৭।
২৪-এ নিটের ফলাফল বেরনোর পরে চূড়ান্ত দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। প্রশ্ন ফাঁসের মত অভিযোগ ওঠে। তাতে কোটি কোটি টাকার লেনদেন থেকে উত্তর লিখে দেওয়ার জন্য ‘সলভার গ্যাং’-এর কয়েক লক্ষ টাকা হাতানোর মত বিষয়ও তদন্তের আওতায় আসে। যদিও শেষ পর্যন্ত কিছু হয়নি। ভেঙে পড়েছেন অনুষ্কাও। তাঁর কথায়, “এটা এনটিএ-র লেখার ভুল, না কোনও দুর্নীতির শিকার হলাম, কিছুই বুঝছি না। কাউকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছি না।” দ্বিতীয় বার নিটে বসার জন্য রাতদিন এক করে প্রস্তুতি নিয়ে ছিলেন অনুষ্কা। তাঁর মা বলছেন, “সাত দিনের মধ্যে এনটিএ উত্তর না দিলে আইনি লড়াইয়ের পথে যাব।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)