দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইক। শনিবার, বিদ্যাসাগর সেতুতে। নিজস্ব চিত্র।
বিদ্যাসাগর সেতুর উপরে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক কিশোরের। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ। ১৭ বছরের ওই কিশোর আরও দুই বন্ধুর সঙ্গে মোটরবাইকে যাচ্ছিল। একটি গার্ডরেলে ধাক্কা মারার পরে বেশ কিছুটা বাইক চালিয়ে যায় সে। এর পরে অসুস্থ বোধ করায় রাস্তায় থামতেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মৃতদেহের ময়না তদন্ত করাচ্ছে পুলিশ। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে মৃতের সঙ্গীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কিশোরের নাম আদিত্য সিংহ। সে স্কুলে পড়ত। আদিত্যের বাবা রাজেশকুমার সিংহ ব্যবসায়ী। বেলুড়ের পিয়ারিমোহন মুখার্জি রোডে বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকত আদিত্য। তার পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জেনেছেন, শুক্রবার রাতে কলকাতার দিকে এসেছিল আদিত্য। সেখান থেকে হাওড়ায় ফেরার পথেই ঘটে বিপত্তি। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরবাইকে সওয়ার হয় আদিত্য। তিন জনের কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপরে রাতে রাস্তার কাজ হচ্ছিল। সেই জন্য এক জায়গায় গার্ডরেল দেওয়া ছিল। তাতেই প্রথমে ধাক্কা মারে আদিত্য। তার দুই বন্ধু পুলিশকে জানিয়েছে, ওই ধাক্কা গুরুতর ছিল না। তাই তাতে মোটরবাইক বা আরোহীদের কারও কোনও ক্ষতি হয়নি। এর পরে ফের বাইকটি চালাতে শুরু করে আদিত্য। তবে, ১০০ মিটার যাওয়ার পরেই বাইকের হ্যান্ডলের নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে আদিত্য।
এক বন্ধু পুলিশকে বলেছে, ‘‘হাত কাঁপছে, নিয়ন্ত্রণ থাকছে না দেখে আমরা ওকে রাস্তার ধারে দাঁড়াতে বলি। কিন্তু, ওর তখন সেটুকু ক্ষমতাও ছিল না। কোনও মতে মোটরবাইক থামাতেই জ্ঞান হারায় আদিত্য। ওকে আমরা রাস্তার ধারে সরিয়ে নিয়ে যাই। বাইকটিও সরিয়ে আনি। কিন্তু, আদিত্যের আর জ্ঞান ফেরেনি।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, আদিত্যকে বন্ধুরা এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু, ঠিক কী কারণে তার মৃত্যু হল, তা স্পষ্ট নয়।
ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা পুলিশের হেস্টিংস থানা এলাকায়। তদন্তকারীদের অনুমান, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই কিশোরের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। দেহের ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। থানায় ছেলের মোটরবাইক দেখিয়ে মৃত কিশোরের বাবা বলেন, ‘‘রাত নেই, দিন নেই, বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ত। এই বাইকের নেশাই ওকে শেষ করে দিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy