Advertisement
E-Paper

খেলার সরঞ্জামের প্রদর্শনীতে পুরনো সে দিনের হদিস 

হারিয়ে যাওয়া খেলা ও খেলার সরঞ্জাম নিয়ে ওই প্রদর্শনীর আয়োজক ছিল ‘কলকাতা কথকতা’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০১:০৭
শ্রীঅরবিন্দ ভবনের প্রদর্শনীতে পুরনো খেলার সরঞ্জাম ঘুরে দেখছেন দর্শকেরা। নিজস্ব চিত্র

শ্রীঅরবিন্দ ভবনের প্রদর্শনীতে পুরনো খেলার সরঞ্জাম ঘুরে দেখছেন দর্শকেরা। নিজস্ব চিত্র

কত খেলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শৈশবের স্মৃতি। কত খেলার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে ইতিহাস।

আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে সময়ের নিয়মেই হারিয়ে গিয়েছে বহু খেলা। হারিয়ে গিয়েছে খেলার সরঞ্জামও। কেমন দেখতে ছিল আগেকার দিনের ফুটবল, কেমন দেখতে ছিল কাঠের টেনিস র‌্যাকেট, ফুটবল বুট? কেমন দেখতে ছিল আগেকার দিনের দাবা বা পাশার বোর্ড?

হারিয়ে যাওয়া খেলা, খেলার সরঞ্জাম, খেলা নিয়ে পুরনো বই, ম্যাগাজিন, ক্যাসেট এমনকি নানা ধরনের খেলা ও উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগিতার ছবি দেওয়া দেশলাই বাক্স, মুদ্রা, এই সব নিয়েই সম্প্রতি প্রদর্শনী হয়ে গেল শ্রীঅরবিন্দ ভবনে।

হারিয়ে যাওয়া খেলা ও খেলার সরঞ্জাম নিয়ে ওই প্রদর্শনীর আয়োজক ছিল ‘কলকাতা কথকতা’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। যে গ্রুপটি কলকাতার ইতিহাস নিয়ে নিয়মিত চর্চা করে। এই গ্রুপের বেশির ভাগ সদস্যই হলেন পুরনো জিনিসপত্রের সংগ্রাহক। এ রকমই কয়েক জন সংগ্রাহক তাঁদের ভাঁড়ার থেকে জিনিসপত্র এনে সাজিয়েছিলেন প্রদর্শনী।

অপূর্বকুমার পান্ডা নামে এক সংগ্রাহক দেখালেন, পুরনো আমলের ফুটবল। যেটির ভিতরে থাকত একটি ব্লাডার। ওই ব্লাডার পাম্প দিয়ে ফোলানো হত। তার পরেই খেলা যেত ওই ফুটবল। অপূর্ববাবুর মতে, আজকের প্রজন্মের অনেকেই হয়তো দেখেননি এই ধরনের ফুটবল।

ছবিতে দেখা যায় পালোয়ানেরা মুগুর ভাঁজছেন। সেই মুগুর দেখতে কেমন ছিল তা সামনাসামনি দেখা গেল প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনীতে মুগুরের পাশেই আবার রাখা ছিল পুরনো দিনের কাঠের র‌্যাকেট, কাঠের ব্যাডমিন্টন, আগেকার দিনের ক্রিকেট প্যাড। শুধু খেলাধুলোর সামগ্রীই নয়, আগেকার দিনে মানুষ ছোট ছোট পকেট রেডিয়োয় খেলার ধারাবিবরণী শুনতেন। সেই পকেট রেডিয়ো দেখা গেল প্রদর্শনীতে। শুধু ক্রিকেট, ফুটবল, বা ব্যাডমিন্টন-ই নয়, প্রদর্শনীতে জায়গা পেয়েছিল বিস্মৃত ডাংগুলি এবং লাট্টু।

শুধু ঘরের বাইরের খেলাই নয়। প্রদর্শনীতে রাখা ছিল বেশ কিছু ঘরে বসে খেলার সরঞ্জামও। সাপ লুডো খেলার মতোই বহু আগে ঘরে বসে খেলা হত ‘নব গোলকধাম’। সেই খেলার সরঞ্জামও দেখা গেল ওই সংগ্রহশালায়। উদ্যোক্তারা জানান, যাটের দশকের পরে নব গোলকধাম খেলাটি কার্যত হারিয়ে যায়।

প্রদর্শনীতে রাখা ছিল প্রাচীন দাবা বোর্ড, লুডো বোর্ড, এবং পাশা, দশ অবতার তাস। কাপড়ের আসনের মতো নকশা করা লুডো বোর্ড দেখে দর্শক দীপান্বিতা রায় বলেন, ‘‘এখন তো মোবাইলেই লুডো খেলি আমরা। কিন্তু লুডো বোর্ড যে এমন সুন্দর হতে পারে, তা এখানে এসেই জানলাম।’’

দেশলাই বাক্সের সংগ্রাহক উৎপল সান্যাল দেখালেন দেশলাই বাক্সে নানা ধরনের খেলার ছবি ও খেলোয়াড়ের ছবি। ১৯৭৪ সাল থেকে তিনি দেশলাই বাক্স সংগ্রহ করছেন। ১৯৮৩ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারত জিতেছিল প্রুডেনশিয়াল কাপ। সেই প্রুডেনশিয়াল কাপের ছবি দেওয়া দেশলাই বাক্স থেকে শুরু করে কপিলদেব, গাভাসকার, জাভেদ মিঁয়াদাদ, ইয়ান বথাম এমনকি হাল আমলের সচিন, সৌরভ, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ছবি দেওয়া দেশলাই বাক্সও রয়েছে উৎপলবাবুর সংগ্রহে।

খেলাধুলো সংক্রান্ত নানা মুদ্রাও বেরিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। ১৯৮২ সালে দিল্লিতে এশিয়ান গেমসের সময়ে বিশেষ মুদ্রা বেরিয়েছিল। সেই সব মুদ্রাও দেখা গেল এই প্রদর্শনীতে।

Exhibition Whatsapp Group Games
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy