E-Paper

উদ্যোগী স্ত্রী-মেয়ে, প্রৌঢ়ের অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হল তিন জনের শরীরে

গত ২২ এপ্রিল রাতে আচমকাই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা শম্ভুপ্রসাদ বেরা। রাতেই তাঁকে স্থানীয় মাল্টি সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:০৪
An image representing Organ Donation

বুধবার ৫৬ বছরের ওই প্রৌঢ়ের বৃক্ক ও যকৃতে নতুন জীবন পেলেন তিন জন। প্রতীকী ছবি।

ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত প্রৌঢ় যে আর ফিরবেন না, তা জেনে গিয়েছিলেন স্ত্রী ও মেয়ে। বিষয়টি ক্রমশ মস্তিষ্কের মৃত্যুর (ব্রেন ডেথ) দিকে এগোচ্ছে শুনে তাঁরাও আর দেরি করেননি। ‘রিজিয়োনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে, ‘কার্ডিয়াক সাপোর্ট’ অ্যাম্বুল্যান্সে প্রৌঢ়কে নিয়ে চলে আসেন পিজিতে। যাতে ব্রেন ডেথ নিশ্চিত হলে ওই প্রৌঢ়ের অঙ্গ দান করা যায়। বুধবার ৫৬ বছরের ওই প্রৌঢ়ের বৃক্ক ও যকৃতে নতুন জীবন পেলেন তিন জন।

জানা গিয়েছে, গত ২২ এপ্রিল রাতে আচমকাই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা শম্ভুপ্রসাদ বেরা। রাতেই তাঁকে স্থানীয় মাল্টি সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা। কিন্তু সেখানে কোনও আশার আলো দেখতে না পেয়ে পরের দিন ওই প্রৌঢ়কে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁরা। তবে, সেখানেও চিকিৎসকেরা আশা দেখাতে পারেননি। এর পরে প্রৌঢ়কে ফের চণ্ডীপুরে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, ২৪ এপ্রিল সকালেই সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, শম্ভুপ্রসাদের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। তা ক্রমশ ব্রেন ডেথের দিকে যাচ্ছে। তাঁর মেয়ে বন্যা এ দিন বলেন, “আমাদের তখন মনে হয়েছিল, ব্রেন ডেথ হলে বাবার অঙ্গে অন্য কেউ অন্তত উপকৃত হোক। বাবাও মরণোত্তর অঙ্গদান এবং দেহদানে খুব উৎসাহী ছিলেন।”

জানা যাচ্ছে, চণ্ডীপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালের ব্রেন ডেথ ঘোষণা করার অনুমতি নেই। যে সমস্ত হাসপাতালের অঙ্গ প্রতিস্থাপন কিংবা ‘নন-ট্রান্সপ্লান্ট অর্গান রিট্রিভাল’ (প্রতিস্থাপন হয় না, কিন্তু অঙ্গ তোলার অনুমতি রয়েছে)-এর লাইসেন্স নেই, তারা কখনও ব্রেন ডেথ ঘোষণা করতে পারে না।

ব্রেন ডেথের বিষয়টি জানার পরে চণ্ডীপুরের ওই হাসপাতালের মালিকের মাধ্যমে রোটো-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রৌঢ়ের পরিজনেরা। এর পরে ২৪ এপ্রিল দুপুরের মধ্যেই তাঁরা তাঁকে নিয়ে চলে আসেন পিজি-র ট্রমা কেয়ারে। সেখানে ভর্তি করা হয় প্রৌঢ়কে। পরের দিন তাঁর ব্রেন ডেথ নিশ্চিত করেন চিকিৎসকেরা। এর পরে অঙ্গদানে সম্মতি দেন বন্যা ও তাঁর মা। সেই পর্ব মিটতেই রোটো-র মাধ্যমে বৃক্ক ও যকৃতের গ্রহীতার খোঁজ মেলে। বুধবার সকালে অঙ্গগুলি তোলা হয় প্রৌঢ়ের শরীর থেকে। জানা যাচ্ছে, আলিপুরের সেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দু’জন রোগী পেয়েছেন শম্ভুপ্রসাদের দু’টি বৃক্ক। যকৃৎ পেয়েছেন দিল্লির ‘আইএলবিএস’ হাসপাতালের এক রোগী। এ দিনই তিন জনের শরীরে অঙ্গ প্রতিস্থাপন-পর্ব সম্পন্ন হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Organ Donation Brain Death

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy