পুলিশকর্মীদের হাতে আক্রান্ত সুজিত চক্রবর্তী।
পুলিশের গাড়ির বনেটে উঠে কখনও আধলা ইট দিয়ে, কখনও ডাবের খোলা দিয়ে বেপরোয়া ভাবে গাড়ির কাচ ভাঙছেন এক যুবক। তাঁর মুখ, কপাল দিয়ে গলগল করে রক্ত ঝরছে। সেই সঙ্গে পুলিশকে লক্ষ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজও করছেন তিনি। গাড়ির পাশে তখন হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে দুই পুলিশকর্মী। যাঁর মধ্যে একজন ওই গাড়ির চালক।
হাওড়া জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সোমবার দুপুরে এই দৃশ্য দেখে তত ক্ষণে ভিড় জমে গিয়েছে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন জরুরি বিভাগের উল্টো দিকে কতর্ব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। তাঁরাই শেষ পর্যন্ত ওই রক্তাক্ত যুবককে ধরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে ওই যুবককে আটক করে হাওড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, সোমবার বাড়িতে পেটের যন্ত্রণায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন লিলুয়ার বেলগাছিয়ার বাসিন্দা আরতি ঘোষ। তাঁর স্বামী ভজন ঘোষ পেশায় রিকশা চালক। প্রৌঢ় ভজনবাবু নিজেই রিকশা চালিয়ে স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশ জানায়, তখন সুজিত চক্রবর্তী নামে স্থানীয় এক যুবক তাঁদের সঙ্গী হন।
(বাঁ দিক থেকে) ডাবের খোলা দিয়ে চলছে গাড়ির কাচ ভাঙা। থানার পথে সুজিত। সোমবার।
সুজিতবাবুর অভিযোগ, হাসপাতালে ঢোকার সময়ে জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পুলিশ ভ্যানের সঙ্গে রিকশাটির সামান্য ধাক্কা লাগে। প্রথমে কিছু না বললেও রোগীকে ভর্তি করে আসার পরে ওই গাড়িতে থাকা দুই পুলিশকর্মী আচমকা এসে তাঁকে গালিগালাজ ও মারধর শুরু করেন। সুজিতবাবু বলেন, ‘‘গাড়ির চালক ঘুষি লাথি মারতে মারতে রাস্তায় ফেলে দেয়। আমার দাঁত ভেঙে গিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। অবশেষে আমি রুখে দাঁড়িয়ে হাতের কাছে যা পাই তাই দিয়ে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর শুরু করি।’’
পুলিশের সামনেই এক যুবক গাড়ি ভাঙচুর করছেন এই খবর ছড়াতেই হাসপাতালে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। খবর পেয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারেরা এবং হাওড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ওই যুবককে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে হাওড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ওই যুবককে মারধর করা যেমন ঠিক হয়নি, তেমনই পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করাও ঠিক হয়নি। ঠিক কী ঘটেছিল তা তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy