একেবারে নাকচ নয়। আর জি করের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ বার জমায়েত-প্রতিবাদে অনুমতি দিল কলকাতা পুলিশ। তবে, ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ের বদলে প্রায় ৫০ মিটার দূরের ওয়াই চ্যানেলে ‘অভয়া মঞ্চ’-কে সেই কর্মসূচি করতে বলা হয়। সেই মতো বুধবার দুপুরে পুলিশের স্থির করে দেওয়া জায়গাতেই অস্থায়ী মঞ্চ বেঁধে প্রতিবাদ সভা করলেন চিকিৎসক ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এবং একাধিক নাগরিক সংগঠনের ওই যৌথ মঞ্চ। অবশ্য সেই সভার জন্য ঘণ্টা তিনেক সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল পুলিশ।
অভয়া মঞ্চের আহ্বায়ক, চিকিৎসক তমোনাশ চৌধুরীর অভিযোগ, এর আগে মিছিল অথবা রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে দ্রোহের কার্নিভাল— কোনও কিছুতেই পুলিশ অনুমতি দেয়নি। উল্টে ১৬৩ ধারা জারি করে রেখেছিল। প্রতি বারই আদালতের অনুমতি নিয়ে কর্মসূচি পালন করতে হয়েছে। তমোনাশ বলেন, ‘‘এই প্রথম পুলিশ লিখিত ভাবে জানাল, কোথায় কর্মসূচি করা যাবে। অর্থাৎ, ন্যায় বিচারের জন্য আন্দোলন-প্রতিবাদ যে ন্যায্য, তা পুলিশও মেনে নিল।’’
এ দিনের কর্মসূচির বিষয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর অভয়া মঞ্চের তরফে কলকাতা পুলিশকে অবগত করা হয়েছিল। এ দিন যার উত্তর আসে। তবে, ডোরিনা ক্রসিংয়ে দিন দশেক ধরে অবস্থান-বিক্ষোভের অনুমতি ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স’-কে দেয়নি কলকাতা পুলিশ। এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে চিকিৎসকদের ওই যৌথ মঞ্চ। এ দিন আদালতে কোনও কাজ না হওয়ায় আজ, বৃহস্পতিবার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
এ দিন ওয়াই চ্যানেলে উপস্থিত চিকিৎসক মানস গুমটা বললেন, ‘‘জায়গা পরিবর্তন করে দেওয়া, বাধা দেওয়ার মতো আচরণ পুলিশের নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই পুলিশই আর জি করের ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটে ব্যস্ত ছিল।’’ আন্দোলনের প্রথম থেকে থাকা অনেক সাধারণ মানুষও শামিল হচ্ছেন বিভিন্ন মিছিল, অবস্থানে। যেমন, ধর্মতলায় অনশন প্রত্যাহারের দিন নিজের জামায় অনশনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের দিয়ে সই করানো জুন নাথ এ দিন চলে এসেছিলেন ওয়াই চ্যানেলে। বললেন, ‘‘আর জি করের ঘটনার পর থেকে মনে হয়, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা কোথায়? যদি থাকে, তা হলে ন্যায় বিচার পেতে এত বিলম্ব কেন হবে আর রাস্তায় বার বার কেন নামতে হবে?’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)