Advertisement
০২ মে ২০২৪
Death

Beating to Death: স্ত্রীর প্রেমিক সন্দেহে যুবককে ‘পিটিয়ে খুন’, ধৃত অভিযুক্ত

পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম দেবজিৎ দাস (২৬)। বাড়ি ডায়মন্ড হারবার রোডে। একই পাড়ায় প্রায় পাশাপাশি বাড়িতে থাকেন অভিযুক্ত অর্ণব।

বুধবার মৃতদেহের ময়না-তদন্তের পাশাপাশি একটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

বুধবার মৃতদেহের ময়না-তদন্তের পাশাপাশি একটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২২ ০৮:২০
Share: Save:

এক যুবকের সঙ্গে স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে, এই সন্দেহে সেই যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ অভিযুক্ত অর্ণব দাসকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার মৃতদেহের ময়না-তদন্তের পাশাপাশি একটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। থানার পাশাপাশি তদন্তে নেমেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারাও।

পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম দেবজিৎ দাস (২৬)। বাড়ি ডায়মন্ড হারবার রোডে। একই পাড়ায় প্রায় পাশাপাশি বাড়িতে থাকেন অভিযুক্ত অর্ণব। তাঁরা তিন ভাই। তেতলা বাড়ির একেবারে উপরের তলায় স্ত্রী ও ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে থাকতেন বছর একান্নর অর্ণব। প্রায় ১৭ বছরের ছোট সেই তরুণীর সঙ্গে দেখাশোনা করেই বিয়ে হয়েছিল তাঁর। ওই বাড়ির একতলা এবং দোতলায় পরিবার নিয়ে থাকেন অর্ণবের বড়দা এবং মেজদা। বড়দা বিপ্লবের সঙ্গে একই ব্যবসায় যুক্ত অর্ণব। বিপ্লবের স্ত্রীর খুড়তুতো ভাই দেবজিৎ। অর্ণবকে তিনি কাকা বলে ডাকতেন। সেই সূত্রে তো বটেই, একই পাড়ায় থাকার সুবাদে দেবজিৎ ও তাঁর বাবার অর্ণবদের বাড়িতে ভালই যাওয়া-আসা ছিল বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।

কিছু দিন আগে বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তোলার ব্যবসা শুরু করেন দেবজিৎ। অর্ণবের স্ত্রীরও ক্যামেরা রয়েছে। তিনিও দেবজিতের সঙ্গে ওই ব্যবসায় যোগ দেন। সেই সূত্রে প্রায়ই তাঁদের বাইরে বাইরে থাকতে হত বলে প্রতিবেশীদের দাবি। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয় অর্ণবের মনে। পরিবারের অন্য সদস্যদেরও সে কথা জানান তিনি। বেশ কিছু দিন ধরে এ নিয়ে পরিবারের মধ্যে চাপা উত্তেজনা চলছিল বলেও জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে সম্প্রতি ওই তরুণী ও দেবজিৎ বাইরে ঘুরতে যান তরুণীর বাবা-মায়ের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে। বিষয়টি ভাল ভাবে নেননি অর্ণব। গত ১১ তারিখ পুরীতে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়। এ বার তরুণীর পরিবারের সঙ্গে দেবজিৎ ও অর্ণব, দু’জনেই যান।

অর্ণবের পরিবারের এক সদস্যের দাবি, ট্রেনে ফেরার সময়েই কিছু নিয়ে অর্ণব ও দেবজিতের মধ্যে ঝামেলা হয়। গত সোমবার তাঁরা বাড়িতে ফেরার পর থেকেই অর্ণব কিছু একটা ঘটিয়ে ফেলবেন বলে দাবি করতে থাকেন। ওই মহিলার কথায়, ‘‘এই কাণ্ড যে ঘটাবে, ভাবা যায়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাড়ার মোড়ে শুনি চিৎকার। পরে জানতে পারলাম, দেবজিৎ আর অর্ণবের মধ্যে প্রবল মারামারি হয়েছে। মারধর করে অর্ণব বাড়ি এসে তেতলার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। দেবজিৎ ওর পিছনে এসেও ধরতে না পেরে চলে যায়। এর পরে শুনি, ও রাস্তায় পড়ে গিয়েছে। বুকে ব্যথা করছে বলতে থাকে। পাড়ার লোকজন দ্রুত ওকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা দেন।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, দেবজিৎকে প্রথমে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ঠাকুরপুকুরেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে এর পরে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই রাত ১টা নাগাদ দেবজিতের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহের ময়না-তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বুধবার চেষ্টা করেও অর্ণবের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। তবে দেবজিতের মা পাপিয়া দাস বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে কী সম্পর্ক ছিল, জানি না। যা-ই থাকুক, এ ভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার কে দিল? দোষীর কঠোর সাজা চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE