দুর্ঘটনার পরদিনই এ ভাবে যাতায়াত। — সজল চট্টোপাধ্যায়
দু’টি শিশুর মৃত্যুর পরে হুঁশ ফিরল প্রশাসনের!
দুর্ঘটনার পরেই বুধবার ডানলপ মোড়ের কাছে সবেদাবাগান বাস স্টপ ও গোটা পিডব্লিউডি রোড পরিদর্শন করেছিলেন পূর্ত ও পুলিশকর্তারা। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বৈঠক করেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ফের হল বৈঠক, পরিদর্শন। তাতেই দক্ষিণেশ্বর থেকে ডানলপ পর্যন্ত রাস্তায় বারবার দুর্ঘটনার কারণ বেরিয়ে এল। সব দফতরের কর্তারাই একমত হলেন, রাস্তার কিছু জায়গার নকশাতেই রয়েছে গলদ।
প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘যে সময়ে রাস্তাটি তৈরি হয়, তখন এত জনবসতি ছিল না। গাড়িও ছিল সীমিত। কিন্তু এখন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই নকশার রাস্তা থাকাতেই পথচারীদের সঙ্গে গাড়ির ধাক্কা লাগছে। তাই কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন।’’
বুধবার মোটরবাইকে স্কুল যাওয়ার পথে ট্রেলারের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে তিন শিশু ও চালক। ঘটনাস্থলেই দুই ভাই-বোন অনিকেত ও সঞ্জনা যাদবের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পিজিতে ভর্তি চার বছরের অনুরাগ। গুরুতর আহত অনিকেত ও অনুরাগের বাবা বিশ্বনাথ যাদব। দুর্ঘটনার পরে পুলিশ কর্তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। অভিযোগ ছিল, রোজ দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে, জনবহুল ডানলপে তীব্র গতিতে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এর পরেই বরাহনগর থানায় আলোচনায় বসেন পুলিশ, পূর্ত, পুরসভা ও ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়ার আধিকারিকেরা।
বৃহস্পতিবার ফের বৈঠকের পাশাপাশি দক্ষিণেশ্বর মোড় থেকে ডানলপ মোড় পর্যন্ত রাস্তা ঘুরে দেখেন সকলে। দেখা যায়, রাস্তায় অনেক প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়েছে। সেগুলিই পরিবর্তন করা হবে। যেমন, তাঁতিপাড়ায় যেখানে নিবেদিতা সেতুর র্যাম্প এসে মিশেছে, সেখানে স্পিড ব্রেকার নেই। ফলে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই এবং তাতেই রাস্তা পার হতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই সেতু থেকে নামার আগেই গতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ সংক্রান্ত বোর্ড লাগানো হবে। সেতুর মুখে তৈরি হবে বেশ কয়েকটি স্পিড ব্রেকারও।
আবার তাঁতিপাড়া বাস স্টপের উল্টো দিকেই রয়েছে একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুল। অনেকেই বাস থেকে নেমে মাঝের ডিভাইডার টপকে রাস্তা পার হন। সেখানে যথেষ্ট উচ্চতায় গার্ডওয়াল তৈরি হবে। সবেদাবাগান আইল্যান্ডটি অনেক বড়। একটি বাতিস্তম্ভের দু’পাশ দিয়ে গাড়ি ইচ্ছে মতো মোড় ঘোরে। তাই সেখানেও নকশার পরিবর্তন করা হবে। ওই রাস্তার যেখানে দেশপ্রাণ শাসমল রোড এসে মিশেছে, সেখানে একটি ছোট আইল্যান্ড তৈরি করা হবে, যাতে ডানলপ ও দক্ষিণেশ্বরের দিকে যাওয়া গাড়ি আলাদা চ্যানেল দিয়ে যাতায়াত করতে পারে। ফুটপাথ ঘেরা হবে রেলিংয়ে। অবৈজ্ঞানিক ভাবে কাটা ডিভাইডারও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
তবে এক দিন আগে যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে এ দিনও বিনা হেলমেটে পড়ুয়াদের বাইকে যেতে দেখা গিয়েছে। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘কেস দিয়েও অনিয়ম বন্ধ করা যাচ্ছে না। মানুষকেও এ নিয়ে সচেতন হতে হবে। শুধু
কেস বা প্রচার করে এ অভ্যাস বন্ধ করা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy