ইংরেজি, তুলনামূলক সাহিত্যে ভর্তি নিয়ে বিতর্ক

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ভর্তি কমিটি বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এ বারেও ভর্তি হবে গত বারের নিয়মে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না-পেরোতেই এই নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বদল হতে পারে এই সিদ্ধান্তের।

গত বছর ইতিহাসের প্রবেশিকা ঘিরে বিতর্কের জেরে গঠিত তদন্ত কমিটি সম্প্রতি যে-সব সুপারিশ করেছে, তার একটি হল, প্রবেশিকা পরীক্ষা যদি নেওয়া হয়, তা হলে মেধা-তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ প্রবেশিকা থেকে নেওয়া হোক, বাকি ৫০ শতাংশ নেওয়া হোক স্কুল স্তরের সর্বশেষ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর থেকে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এই সুপারিশ অগ্রাহ্য করে স্থির হয়, গত বছরের নিয়ম মানা হবে। গত বারের মতোই ছ’টি বিষয়ে নেওয়া হবে ভর্তি-পরীক্ষা। গত বছরের নিয়ম অনুযায়ী ইংরেজি আর তুলনামূলক সাহিত্যে ভর্তি নেওয়া হবে শুধু প্রবেশিকা পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ইতিহাস, বাংলা, দর্শনের ভর্তি নেওয়া হবে প্রবেশিকা পরীক্ষার ৫০ শতাংশ এবং বাকি ৫০ শতাংশ স্কুল স্তরের সর্বশেষ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের যোগফলের ভিত্তিতে।

শিক্ষা সূত্রের খবর, গোল বেধেছে ইংরেজি আর তুলনামূলক সাহিত্যের ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে। তুলনামূলক সাহিত্য স্কুল স্তরে পড়ানো হয় না বলে প্রবেশিকার নম্বরকেই যোগ্যতা নির্ণায়ক বলে মনে করা হচ্ছে।

ইংরেজি স্কুল স্তরে পড়ানো হলেও পড়ুয়ার মৌলিক চিন্তাভাবনার প্রকাশ ঘটে প্রবেশিকা পরীক্ষাতেই। কলা বিভাগের ডিন শুভাশিস বিশ্বাস বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই দুই বিষয়ে এমনই যুক্তি গ্রহণ করা হচ্ছে। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এ দিন কলা বিভাগের ডিন এবং ইংরেজি ও তুলনামূলক সাহিত্যের শিক্ষকদের ডেকে পাঠান। এক বারে ১০০ শতাংশ নম্বরই প্রবেশিকা থেকে না নিয়ে এই দুই বিষয়ে স্কুল স্তরের সর্বশেষ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরেরও কিছুটা অংশ শতাংশ রাখার কথাই বলা হয়েছে।

যাদবপুরে কিছু বিষয়ে সরাসরি ভর্তি হয় আর কিছু বিষয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয় কেন, বারে বারেই এই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের খবর, গত বছর পরীক্ষা নিয়ে তুমুল বিতর্কের পরে আবার সেই একই নিয়মে ভর্তির পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত ভাল চোখে দেখছে না বিকাশ ভবন। ভর্তির পদ্ধতি নিয়ে বর্তমান গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ এবং প্রাক্তন বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের তদন্ত কমিটির সুপারিশ যে-ভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে, তা-ও পছন্দ করছে না তারা।

পরীক্ষা নিয়ে ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত এ বার কর্মসমিতিতে যাওয়ার কথা। কলা বিভাগের ডিন শুভাশিসবাবু এ দিন বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি নিয়ে আগে কর্মসমিতির বৈঠকে আলোচনা হবে।’’ তবে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কর্মসমিতি থেকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য ভর্তি কমিটিতে ফেরানোর সম্ভাবনাই প্রবল। কারণ ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ভর্তি কমিটিরই।