Advertisement
E-Paper

ভুয়ো নথিতে ভর্তি, অভিযোগ হতেই পার আড়াই বছর

ভুয়ো নথি জমা দিয়ে শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা ফাঁস হয়েছিল আড়াই বছর আগে। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, তখন কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশের কাছে সঠিক ভাবে অভিযোগ করা হয়নি।

শিবাজী দে সরকার ও সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৯

ভুয়ো নথি জমা দিয়ে শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা ফাঁস হয়েছিল আড়াই বছর আগে। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, তখন কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশের কাছে সঠিক ভাবে অভিযোগ করা হয়নি। আড়াই বছর পরে উচ্চশিক্ষা দফতরের ভিজিল্যান্স বিভাগের কড়া চিঠির চাপে পড়ে গত শুক্রবার পুলিশের কাছে সেই অভিযোগ করলেন কলেজের অধ্যক্ষ অশোক মুখ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ করতেই কেন আড়াই বছর পেরিয়ে গেল, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজের ওই ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে শ্যামপুকুর থানায় শংসাপত্র (কাস্ট সার্টিফিকেট) জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ। তার প্রেক্ষিতে সোমবার পুলিশের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষের বাণিজ্য বিভাগের দুই ছাত্রী-সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা, যড়যন্ত্র-সহ পাঁচটি ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, সকাল, দিবা ও সান্ধ্য বিভাগ মিলিয়ে ২০১৪ সালে প্রথম বর্ষে সংরক্ষিত আসনে মোট ৪০০ পড়ুয়া ভর্তি হন। কিন্তু অনেকের শংসাপত্র জাল বলে সন্দেহ হলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি কর্তৃপক্ষ। কলেজেরই একাংশের চাপে ওই বছরের ডিসেম্বরে পরিচালন সমিতিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। অভিযোগ পেয়েও অধ্যক্ষ কেন তদন্ত করেননি, তা নিয়ে তোলপাড় হয় সে দিনের বৈঠক। এর পরে চাপে পড়ে পুলিশ এবং উচ্চশিক্ষা দফতরের ডিরেক্টর অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন’ (ডিপিআই) এর কাছে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু অভিযোগ, উচ্চশিক্ষা দফতরে জানানো হলেও পুলিশকে দীর্ঘ ১২৯ পাতার তথ্য দেওয়া হয়েছিল। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ওই তথা পেয়ে পুলিশ সঠিক ভাবে অভিযোগ জানাতে বললেও কলেজের তরফ থেকে তা করা হয়নি। আর এখানেই রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকে। কারণ তার পর থেকে কার্যত ধামাচাপা পড়ে যায় বিষয়টি।

এর পরে ২০১৫ সালের অগস্টে এক ছাত্র তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে রহস্য ফাঁস হয়। গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে দফতরের ভিজিল্যান্স বিভাগে অভিযোগ করেন ওই ছাত্র। তার পরেও কেটে গিয়েছে আরও দেড় বছর। এর মধ্যে ডিসেম্বরে ভিজিল্যান্স থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ করার নির্দেশ পেয়ে শ্যামপুকুর থানায় ১৬ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন অশোকবাবু। অভিযুক্ত প্রত্যেকেরই তৃতীয় বর্ষে ভর্তি বাতিল করে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

লালবাজার সূত্রের খবর, অভিযুক্তেরা কোথা থেকে ওই জাল শংসাপত্র পেলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলেজের কয়েক জন প্রাক্তন ছাত্র নেতা-সহ বেশ কয়েক জনের নামের তালিকাও তৈরি করেছেন তদন্তকারীরা। কলেজের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-কর্তৃপক্ষ কেউ ওই ঘটনায় জড়িত কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।

কলেজ সূত্রের খবর, জালিয়াতি হয়েছে মূলত তফশিলি শংসাপত্র নিয়ে। কলেজের অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভুয়ো শংসাপত্রের বিষয়ে যে রকম নির্দেশ এসেছে, সেই মতোই পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ পুলিশের কাছে অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পুলিশের কাছে যথাযথ ভাবেই অভিযোগ করা হয়েছিল। এখন যা রটছে, সেগুলি গুজব।’’ পড়ুয়াদের ভবিষ্যত সম্পর্কে তাঁর মত, ‘‘বিষয়টি দুঃখজনক। কিন্তু তারা যে অপরাধ করেছে, তার জন্য আমার কিছু করার নেই।’’

Jaipuria College fake documents College Admission complaints lodged
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy