ইউনেস্কোর কালচারাল হেরিটেজের তালিকায় গত বছর স্বীকৃতি পেয়েছে দুর্গোৎসব। প্রতীকী ছবি।
এত দিন যাদের নাগাল পাওয়া কঠিন ছিল, আগ বাড়িয়ে এ বছর তারাই খোঁজ নিচ্ছে বিজ্ঞাপনের! ভিন্ রাজ্যের একাধিক সংস্থার এই উলট-পুরাণ কি বাড়তি অক্সিজেন দিচ্ছে পুজো কমিটিগুলিকে? ইউনেস্কোর স্বীকৃতিই এই উৎসাহ এনেছে বলে মনে করছেন শহরের পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশ।
ইউনেস্কোর কালচারাল হেরিটেজের তালিকায় গত বছর স্বীকৃতি পেয়েছে দুর্গোৎসব। সেই স্বীকৃতি প্রাপ্তির পরে প্রথম পুজো হচ্ছে এ বছর। ফলে দুর্গাপুজো দেখতে কলকাতায় বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিন কয়েক আগে শহরের পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে তিনি অনুরোধ করেন, এক মাস আগে কমিটিগুলিকে একত্রে মিছিল বার করতে। গত দু’বছরের তুলনায় করোনার প্রকোপ কম থাকায় এ বছর পুজোয় কোনও বিধিনিষেধ থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। এই সব সুযোগের সদ্ব্যবহার করতেই পুজোর ক’দিন ওই সব সংস্থা নিজেদের প্রচারে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে অনুমান।
শহরের পুজোকর্তারা জানাচ্ছেন, বিজ্ঞাপন দিতে চেয়ে ভিন্ রাজ্যের অনেক সংস্থাই যোগাযোগ করছে। যাদের বেশির ভাগের প্রধান কার্যালয় দিল্লি অথবা মুম্বইয়ে। বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং দেওয়ার ক্ষেত্রে কী দর, জায়গা ফাঁকা আছে কি না— ইত্যাদি বিষয় নিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে উদ্যোক্তাদের একাংশ দাবি করছেন। দক্ষিণ কলকাতার একটি বড় পুজোর উদ্যোক্তা বলেন, ‘‘এত দিন এই সব সংস্থার দুয়ারে ধর্না দিলেও বিজ্ঞাপন মিলত না। ‘পুজোয় বিজ্ঞাপন দিই না’ বলে জানিয়ে দিত। আজ তারাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।’’ ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু জানাচ্ছেন, এটা একটা ভাল দিক, তাতে সন্দেহ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দুর্গোৎসবের মুকুটে নতুন পালক দিয়েছে। যা বিদেশি এবং ভিন্ রাজ্যের পর্যটকদের আগ্রহ বাড়িয়ে তুলেছে। অনেকেই পুজো দেখতে কলকাতায় আসবেন। এ সব ভেবেই ভিন্ রাজ্যের সংস্থা বিজ্ঞাপন দিতে উৎসাহী হচ্ছে।’’
দিন কয়েক আগে বিজ্ঞাপন দেওয়া নিয়ে দিল্লির এক সংস্থার আগ্রহ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন দেশপ্রিয় পার্কের পুজোকর্তা সুদীপ্ত কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘ভিন্ রাজ্যের সংস্থা সাধারণত পুজোয় বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী হয় না। প্রথম দেখছি, এই রকম একাধিক সংস্থা কখনও এজেন্সি মারফত, কখনও নিজেরাই দরদাম খোঁজ নিচ্ছে।’’ গোটা বিষয়ে আশার আলো দেখছেন তিনি।
সুরুচি সঙ্ঘের পুজোকর্তা কিংশুক মিত্র বলেন, ‘‘বিজ্ঞাপন পুজোর মোটামুটি দু’-তিন সপ্তাহ আগে ঠিক হয়। রাজ্যের একাধিক ছোট-বড় সংস্থা এগিয়ে আসে। তবে ভিন্ রাজ্যের সংস্থা আসে না।’’ একই কথা শুনিয়েছেন উত্তর কলকাতার একাধিক পুজো কমিটির কর্তারাও। যদিও এ ব্যাপারে পাকা কথা না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বাস করতে চাইছেন না অধিকাংশ পুজোকর্তাই।
শহরের একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার অন্যতম কর্তা ভাস্কর চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এ বছর পুজোয় বিজ্ঞাপন দেওয়া নিয়ে ভিন্ রাজ্যের কিছু সংস্থার আগ্রহ আছে। তবে কোন পুজো কেমন দর্শক টানে, তার খতিয়ান দেখেই এগোতে চাইছে সংস্থাগুলি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy