Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Talk to Mayor

‘টক টু মেয়রে’ নালিশ জানিয়ে হেনস্থার শিকার অভিযোগকারীই

অভিযোগ, ‘টক টু মেয়রে’ ফোন করা সেই ব্যক্তির উপরে সে দিনই চড়াও হয় স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির অনুগামীরা। ঘটনার জেরে আহত ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।

An image of Firhad Hakim

‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে সরাসরি মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ০৮:৫৪
Share: Save:

কলকাতা পুরসভার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে সম্প্রতি ফোন করে এলাকার ভ্যাট সরিয়ে উদ্যান গড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন নারকেলডাঙার এক বাসিন্দা। তাঁর প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করে এসেছিলেন পুরসভার উদ্যান বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারেরা। কিন্তু অভিযোগ, ‘টক টু মেয়রে’ ফোন করা সেই ব্যক্তির উপরে সে দিনই চড়াও হয় স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির অনুগামীরা। ঘটনার জেরে আহত ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।

বিভিন্ন পুর পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যার সুরাহা পেতে কলকাতার নাগরিকদের ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে সরাসরি মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, তা করতে গিয়ে এলাকায় ‘চক্ষুশূল’ হয়ে পড়ছেন অভিযোগকারীই। নারকেলডাঙার ঘটনা তারই একটি উদাহরণ। তবে অতীতেও একাধিক বার ‘টক টু মেয়রে’ নালিশ জানিয়ে অভিযোগকারী এলাকায় হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মাস চারেক আগে কাশীপুরের এক মহিলা মেয়রকে ফোন করে ফুটপাতের জায়গা বিক্রির অভিযোগ এনেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, প্রচুর টাকা খরচ করে ডালা কিনলেও সেখানে পসরা নিয়ে তাঁকে বসতে দিচ্ছেন না স্থানীয় হকার সংগঠনের নেতারা। কান্নায় ভেঙে পড়ে মণিকা জানা নামে ওই মহিলা ফোনে মেয়রকে বলেছিলেন, ‘‘অনেক কষ্ট করে শ্যামবাজার গান্ধী মার্কেটে একটা ডালা নিয়েছিলাম। সেই জায়গার জন্য আমার থেকে দেড় লক্ষ টাকা নিয়েছে। তার কাগজও আমার কাছে আছে। কিন্তু সেখানে বসতে গেলে ওরা বাধা দেয়। আমার ছেলে শ্যামবাজারে ঢুকতে পারছে না। তালা ভেঙে ডালা নিয়ে নিয়েছে।’’ ওই ঘটনার চার মাস পরেও শ্যামবাজারে হকারির ডালা ফিরে পাননি মণিকা ও তাঁর ছেলে অনিমেষ। উল্টে অভিযোগ, এখনও তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে অনিমেষ বলেন, ‘‘মা মেয়রকে ফোন করার পরেও কাজের কাজ কিছু হল না। উল্টে এলাকার হকার নেতারা আমাদের হুমকি দিয়ে বলছেন, মেয়রকে ফোন করেও লাভ হল কি? তাঁদের ভয়ে শ্যামবাজারে এখনও ঢুকতে পারি না।’’

একই ভাবে মাসকয়েক আগে তালতলার এক বাসিন্দা মেয়রকে ফোন করে এলাকায় অবৈধ নির্মাণের বাড়বাড়ন্তের অভিযোগ করেছিলেন। এর পরেই তাঁর কাছে একাধিক বার হুমকি ফোন আসে বলে অভিযোগ। এমনকি তাঁকে এলাকাছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হয়। বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার খেসারত হিসাবে ইতিমধ্যেই অভিযোগকারীর নামে তালতলা থানায় একাধিক ধারায় মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘টক টু মেয়রে বেআইনি নির্মাণের নালিশ জানানোর পরেই ওই অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে একাধিক বার প্রস্তাব এসেছিল। যদিও সে সমস্ত বিষয়ে আমি কর্ণপাত করিনি।’’ মাস চারেক আগে বেআইনি ভাবে পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে নালিশ জানান কলকাতা পুরসভার ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডের নাদিয়ালের এক বাসিন্দা। অভিযোগ, তার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতেই নিগ্রহের শিকার হন তিনি। নাম প্রকাশেঅনিচ্ছুক ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘এলাকায় বেআইনি ভাবে পুকুর ভরাট হওয়ার কথা মেয়রকে জানিয়েছিলাম বলে আমাকেই মারধর করা হয়েছিল। এই এলাকাতেই আমায় থাকতে হবে। তাই আর বেশি দূর এগোইনি।’’

কেন বার বার হেনস্থার শিকার হচ্ছেন অভিযোগকারীরাই? এর উত্তরে মেয়র ফিরহাদ বলেন, ‘‘এমন দু’-একটি ঘটনা ছাড়া হাজার হাজার মানুষ ফোন করে অনেক সমস্যাতেই সুরাহা পাচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Talk to Mayor Firhad Hakim harassment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE