Advertisement
E-Paper

প্রেমের ‘শাস্তি’ মার, মিলল যুবকের দেহ

প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে মেয়ের প্রেমের সম্পর্কে আপত্তি ছিল পরিবারের। অভিযোগ, সম্পর্ক ভাঙতে ওই যুবককে আগেও কয়েক বার মারধর করেছিল তরুণীর পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০০:২৩
সনাতন শিউলি

সনাতন শিউলি

প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে মেয়ের প্রেমের সম্পর্কে আপত্তি ছিল পরিবারের। অভিযোগ, সম্পর্ক ভাঙতে ওই যুবককে আগেও কয়েক বার মারধর করেছিল তরুণীর পরিবার। কিন্তু টলানো যায়নি দু’জনকে। রবিবার দুপুরে বাড়ির জানলা থেকে প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলছিলেন ওই তরুণী। সেই দৃশ্য দেখে ফেলেন পরিবারের লোকজন। অভিযোগ, বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলার ‘অপরাধে’ ওই যুবককে প্রকাশ্যেই মারতে মারতে স্থানীয় একটি ক্লাবঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও চলে মারধর। এর পরে সন্ধ্যায় এলাকার মাঠের পাশে একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মেলে ওই যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ।

রবিবার এই ঘটনা ঘটেছে জগাছার উনসানি শিউলিপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম সনাতন শিউলি (২৬)। স্থানীয় হালদারপাড়ার মাঠের পাশে একটি গাছে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায়। সনাতনের বাড়ি জগাছা থানা এলাকায়। কিন্তু যেখানে তাঁর দেহ মেলে, সেটি ডোমজুড় থানার অধীনে হওয়ায় সেখানেই একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে তাদের অনুমান, ওই যুবক অপমানে আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে ময়না-তদন্তের পরেই তা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে।

কোনা এক্সপ্রেসওয়ের খেজুরতলার কাছে উনসানি শিউলিপাড়ায় কাছাকাছিই বাড়ি সনাতন ও ওই তরুণীর। পুলিশ জানায়, জমিজমা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে পুরনো বিবাদ ছিল। সেই বিবাদই দু’জনের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পুলিশ জানায়, রবিবার সনাতন ওই তরুণীর বাড়ির জানলার সামনে এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন। তরুণীর বাবা তা দেখে ফেলেন। অভিযোগ, এর পরে সনাতনকে মারতে মারতে স্থানীয় একটি ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মেঝেতে ফেলে বেধড়ক মারা হয়। মারের চোটে সনাতনের মুখের বাঁ দিকে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। পুলিশ জানায়, এর পরে সন্ধ্যায় গাছ থেকে ঝুলতে দেখা যায় সনাতনকে।

সোমবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হতেই উনসানি এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই যুবকের মৃত্যুর জন্য তরুণীর পরিবারকে দায়ী করে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, পিতৃহীন সনাতনের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। সেই কারণেই তরুণীর পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগেও সনাতনকে ওই তরুণীর পরিবারের লোকজন মারধর করেছেন। তখন পাড়ার লোকেরাই রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। অক্ষয় মালিক নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এর আগেও সনাতনকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। মারধরও করা হয়েছে।’’

মৃতের মা চাঁপা শিউলি বলেন, ‘‘ওই মেয়েটির সঙ্গে আমার ছেলের তিন বছর ধরে সম্পর্ক ছিল। মেয়ের বাড়ির লোক এই সম্পর্ক মেনে নিতে চায়নি। আমার ছেলেকে ওরা খুন করে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে।’’

এই অভিযোগ অবশ্য ওই তরুণীর পরিবারের লোকেরা অস্বীকার করেছেন। তরুণীর মা শুকতারা শিউলি বলেন, ‘‘আমার মেয়ের সঙ্গে ওই ছেলেটির সম্পর্ক ছিল না। ওকে তেমন কিছু মারধরও করা হয়নি। ছেলেটি আমার মেয়েকে বিরক্ত করত। রবিবার তা দেখে ফেলায় আমার স্বামী ক্লাবে নিয়ে গিয়ে কয়েকটা চড়থাপ্পড় মেরেছেন। এর পরে কী ভাবে মারা গিয়েছে, জানি না।’’

হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মনে হচ্ছে, মারধর খাওয়ার পরে ওই যুবক অপমানে আত্মঘাতী হয়েছেন। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই নির্দিষ্ট ভাবে বলা যাবে।’’

Beating Youth Suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy