Advertisement
E-Paper

শহরে প্রাতর্ভ্রমণে বিপদ সঙ্কেত, ভোরে বিষ বাতাস ঢুকছে শরীরে

আসলে ভোরের দিকে বাতাস আর নিরাপদ নয়। বিষ বাতাসে ঢেকে যাচ্ছে শহর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:৪৩
প্রাতর্ভ্রমণের জন্য নিরাপদ নয় কলকাতার বাতাস।—ফাইল চিত্র।

প্রাতর্ভ্রমণের জন্য নিরাপদ নয় কলকাতার বাতাস।—ফাইল চিত্র।

ভোরের দিকে হাঁটতে ভালবাসেন? সকাল সকাল মাঠে গিয়ে শরীরচর্চার অভ্যেসও রয়েছে? তা হলে, এই শীতের মরসুমে প্রাতর্ভ্রমণের বিষয়টি ভুলে যান। তার থেকে বরং ঘরের ভিতরেই শরীরচর্চা সেরে নিন।

ভাবছেন কেন? হঠাৎ এমন কী হল যে, সকালে শরীরচর্চা করা যাবে না?

আসলে ভোরের দিকে বাতাস আর নিরাপদ নয়। বিষ বাতাসে ঢেকে যাচ্ছে শহর। প্রাতর্ভ্রমণের সময় এই বাতাস আপনার শরীর ঢুকলে ফুসফুসে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন: রাজ্যপালের শাসনে আস্থা হারাচ্ছে কাশ্মীর? মৃত্যু উপত্যকা হয়ে ওঠা ভূস্বর্গে ‘জটিল’ পরিস্থিতি​

কেন শীতের সময় এমন মারাত্মক আকার নিচ্ছে বায়ুদূষণ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাতের দিকে আগুন পোহানোর জন্যে কাগজ, প্লাস্টিক পোড়ানোর প্রবণতা দেখা যায়। এর পাশাপাশি এখনও ফুটপাতে খাবারের হোটেলে কয়লার আঁচে রান্না হয়। তা থেকেও দূষণ ছড়ায়। দিল্লিতে সিএনজি গ্যাসে গাড়ি চললেও, সে দৃশ্য এই শহরে অমিল। কলকাতায় ডিজেলচালিত গাড়ির সংখ্যাই বেশি। তা ছাড়া অনেক বেশি মাত্রায় পুরনো গাড়ি চলে কলকাতায়। দূষণের জন্যে সেটাও অন্যতম বড় কারণ।

ফুসফুস বিশেষজ্ঞ দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত বলেন, “সকালের দিকে বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম ২.৫) মাটির কাছাকাছি থাকে। শ্বাস নেওয়ার সময় সেগুলি সহজেই শরীরে ঢুকে যায়। ফলে শীতের সময় প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে শরীরচর্চা না করাই ভাল।”

গত এক সপ্তাহে ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫ (সূক্ষ্ম ধূলিকণা)-এর পরিমাণ ছিল ৪০০ থেকে ৩০০-র ঘরে। কখনও কখনও তা ৫০০-র ঘরেও পৌঁছে গিয়েছে। যা বিপজ্জনক থেকে মারাত্মাক বিপজ্জনক পর্যায়ের। কলকাতায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে দূষণ মাপক যন্ত্রে এমনই বিপদ সঙ্কেত ধরা পড়েছে। তবে দক্ষিণের তুলনায় উত্তর কলকাতার বাতাসে বিষের মাত্রা অনেকটা বেশি।

আরও পড়ুন: রাফাল নিয়ে আদালতকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে সরকার, অভিযোগ বিরোধীদের

শনিবার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে দূষণ মাপার যন্ত্রে ভোর ৫টার সময় পিএম ২.৫-এর পরিমাণ ছিল ৩২৩। তার পরে সকাল ৮টায় তা পৌঁছে যায় ৩৩০-র ঘরে। অন্য দিকে, দক্ষিণ কলকাতার ভিক্টোরিয়ার দূষণ যন্ত্রে ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টায় এই মাত্রা ২৩০ থেকে ২৫০। ফলে সকালের বাতাসে যে পরিমাণ দূষণ ধরা পড়ছে, তা কোনও মতেই শরীরের পক্ষে ভাল নয়।

বাতাসে থাকা সেই ধূলিকণাগুলিকেই পিএম ২.৫ বলা হয়, যেগুলির ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত ছোট বলেই এই কণাগুলি বাতাসের সঙ্গে খুব সহজে আমাদের শরীরের কোষগুলিতে ঢুকে যেতে পারে। তার প্রভাবে আমরা শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে যেতে পারি। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। শিশু এবং প্রবীণরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। চর্ম রোগ এবং ফুসফুসের সমস্যাও দেখা দেয়।

বাতাসে পিএম ২.৫-এর পরিমাণ ৫০ থেকে ৬০ থাকলে ভাল বলা হয়। এই পরিমাণ ১০০ হয়ে গেলেও তা সহনযোগ্য। কিন্তু তা ২০০ পেরিয়ে গেলেই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে শুরু করে।

Air Pollution Health Morning Walk Environment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy