বেলগাছিয়া মেট্রোস্টেশন। —ফাইল চিত্র।
বেলগাছিয়া মেট্রো স্টেশনে সবে ঢুকছিল ট্রেন। ডাউন লাইনের বাঁকে আলোর দেখা পেতেই স্টেশনের শেষ প্রান্তে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলেন এক বৃদ্ধ। বয়স ৭৩। ক্লান্ত চেহারা। পোশাক-আশাক সাধারণ। ট্রেন প্ল্যাটফর্মের কাছাকাছি আসতেই তাঁর শরীরটা ঝাঁপিয়ে পড়তে গেল মেট্রোর লাইনে। ঠিক সেই মুহূর্তে একটা হাত এক ঝটকায় টেনে নিয়ে এল তাঁকে।
কয়েক মুহূর্তের অন্ধকার হঠাৎ কেটে গিয়ে তাঁর চোখে-মুখে তখন প্ল্যাটফর্মের ঝকঝকে আলো। কিন্তু তখনও তিনি হতচকিত। তাঁর হাতটি ধরে রয়েছেন মেট্রো স্টেশনেই কর্তব্যরত এক আরপিএফ কর্মী। তিনি কিছু বলছেনও। কিন্তু বৃদ্ধ তখনও শুনতে পাচ্ছেন না। ভাবতেই পারছেন না এখনও তিনি বেঁচে আছেন।
বুধবার সকালে এই ভাবেই মেট্রোয় এক বৃদ্ধের আত্মহত্যার চেষ্টা আটকে দিলেন কর্তব্যে সতর্ক ওই আরপিএফ কর্মী। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বেলগাছিয়া মেট্রো স্টেশনের দমদমের দিকে যাওয়ার প্রান্তে। ডাউন লাইনের পাশের প্ল্যাটফর্মে। সেখান থেকেই ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে এনে স্টেশন ম্যানেজারের অফিসে এনে বসান ওই আরপিএফ কর্মী। তত ক্ষণে তাঁকে ঘিরে ভিড় করেছেন মেট্রোর কর্মীরা।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের প্রশ্নের মুখে বৃদ্ধ স্বীকার করে নেন আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন তিনি। পারিবারিক অশান্তি সহ্য করতে না পেরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নিজেকে শেষ করে দেওয়ার। ভাবতে পারেননি কেউ তাঁকে বাঁচাতে আসবে!
বৃদ্ধের কথা শোনার পরই মেট্রোর তরফে যোগাযোগ করা হয় তাঁর পরিবারের সঙ্গে। পরে পৌনে ৮টা নাগাদ বিষয়টি জানানো হয় উল্টোডাঙ্গা থানায়। ৮টা ৪০ মিনিট নাগাদ তাঁকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে।
মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয় কুমাক রেড্ডি এই প্রাণ বাঁচানোর ঘটনায় ওই আরপিএফ কর্মীর প্রশংসা করেছেন। মোক্ষম মুহূর্তে তাঁর তৎপরতার কারণেই যে মেট্রো পরিষেবা বড় সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পেল তা-ও জানিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy