Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Alipore Zoo

শহরে গ্রীষ্ম এসে গেলেও আলিপুরে ‘আজ বসন্ত’

প্রশ্ন উঠতেই পারে, পশুপাখিরা তো নিজের মুখে আব্দার করতে পারে না। তা হলে প্রয়োজন হচ্ছে কি না, তা জানার কৌশল কী?

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২১ ০৫:৩৭
Share: Save:

ভোট আবহে রাজনীতির পারদ তুঙ্গে। তারই মধ্যে ঘরে ঘরেও লেগেছে গ্রীষ্মের ছোঁয়া। ফ্যান চালিয়ে রাতে ঘুমনোই দস্তুর। তবে আলিপুর চিড়িয়াখানায় এখনও ‘বসন্ত’ বিরাজ করছে! তাই ফ্যান ছাড়াই দিনযাপন করতে হচ্ছে বাঘমামাদের। হোসপাইপের ফোয়ারায় গা ভেজাতে পারছে না পক্ষীকুলও। গ্রীষ্ম এলেই এই সব ‘মানবিক’ আরাম পায় পশুপাখিরা। তা হলে এখনও সেই ব্যবস্থা পাচ্ছে না কেন?

আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত বলছেন, ‘‘ভোরের দিকে ঠান্ডা পড়ছে। তাই এখনই ফ্যান চালানোর বা স্নান করানোর প্রয়োজন নেই। আরও গরম পড়লে সেই সব ব্যবস্থা করা হবে।’’ হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেও তাপমাত্রা আহামরি কিছু বাড়বে না।

প্রশ্ন উঠতেই পারে, পশুপাখিরা তো নিজের মুখে আব্দার করতে পারে না। তা হলে প্রয়োজন হচ্ছে কি না, তা জানার কৌশল কী? চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, প্রয়োজন হচ্ছে কি না, তা বোঝার জন্যই ‘কিপার’ বা পশুপাখিদের পালক-পিতারা রয়েছেন। নিত্যদিন তাঁরাই নজরদারি করেন পোষ্যদের উপরে। অবোলা প্রাণীদের হাবেভাবেই ওঁরা বুঝে যান কী প্রয়োজন রয়েছে ওদের। ওই সূত্রের দাবি, মানুষের মতো পশুপাখিরা ততটা ‘আরামপ্রিয়’ নয়। বরং প্রকৃতির বদলের সঙ্গে নিজেদের জীবন মানিয়ে নিয়েই চলে তারা। খাঁচার ভিতরে বদ্ধ জীবনে ফ্যান বা জলের ফোয়ারার ব্যবস্থা করা হয় বটে। কিন্তু যত ক্ষণ না পরিস্থিতি একেবারে নাগালের বাইরে যাচ্ছে তত ক্ষণ সে সব কিছুই প্রয়োজন হয় না। উল্টে ভোরের দিকে তাপমাত্রা কম থাকায় ফ্যান চালালে বা অতিরিক্ত স্নান করালে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে পশুপাখিরা।

এ বছর মার্চ থেকেই যা তাপমাত্রার বহর দেখা যাচ্ছে তাতে এপ্রিল-মে মাসে ‘আগুন’ ঝরতে পারে। চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, পরিস্থিতি আঁচ করে আগে থেকেই প্রস্তুতি রয়েছে। বাঘ-সিংহের মতো পশুদের ঘরে স্ট্যান্ড ফ্যান দেওয়ার পাশাপাশি বার বার স্নান করানো হয়। পাখিদের ঘরে আলাদা করে ছাউনি তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, গরমে বদলে যায় চিড়িয়াখানার ‘মেনু কার্ড’ও। সূত্রের দাবি, গরমে মানুষের মতোই হজমের সমস্যা হয় পশুপাখিদের। তাই চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী মাংসাশী প্রাণীদের মাংসের বরাদ্দ কমে যায়। নিরামিষখেকোদের মেনু কার্ডে বেড়ে যায় রসালো ফলের পরিমাণ। সঙ্গে নিয়মিত ওআরএস। তবে শিম্পাঞ্জি ‘বাবু’র মতো প্রবীণদের প্রতি থাকে আরও খানিকটা বেশি নজর।

তবে সে সব এখনও পরিকল্পনার খাতাতেই। মানুষের গরম লাগুক না-ই বা লাগুক, আলিপুরে ‘আজ বসন্ত’!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Alipore Zoo animals Autumn
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE